ফের বিস্ফোরক তথাগত রায়, জানালেন বঙ্গ BJP-তে অর্থ এবং নারীর চক্রের কথা

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: ফের ফুঁসে উঠলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায়। বিগত কয়েকদিন ধরে চলা তথাগত রায়-দিলীপ ঘোষ সংঘাতে নতুন সংযোজন জুড়লেন মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল। আর দলের দুই অভিজ্ঞ নেতা যেভাবে পরস্পরকে আক্রমণ করছেন, তা রাজ্য বিজেপি-র কাছে ক্রমেই অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ শনিবারই তথাগত রায়কে সরাসরি দল ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ পাল্টা অবশ্য দিলীপকে অর্ধ শিক্ষিত বলতেও পিছপা হননি তথাগত। দলের প্রবীণ নেতাকে পাল্টা দিতে রামকৃষ্ণ-রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন দিলীপ। স্বাভাবিকভাবেই আর অপেক্ষা করেননি তথাগত। ট্যুইটে ফের বিঁধেছেন রাজ্য বিজেপি নেতাদের।

    সোমবার সকালে ট্যুইটে তথাগত লেখেন, ”৩ থেকে ৭৭(এখন ৭০) গোছের আবোলতাবোল বুলিতে পার্টি পিছোবে, এগোবে না। অর্থ এবং নারীর চক্র থেকে দলকে টেনে বার করা অত্যাবশ্যক। দলের নবনিযুক্ত সভাপতি ও বিরোধী দলনেতা – এঁরা দুজনে নেতৃত্ব দিন। পুরোনো চক্রে ফেঁসে থাকলে এখন যে পুরভোটের প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না এরকম অবস্থাই চলবে।” রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ট্যুইটের নিশানাতেই রয়েছেন দিলীপ ঘোষ। কারণ দলের নবনিযুক্ত সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ করেছেন তথাগত রায়। আর পুরনো চক্র বলতে তাঁর নিশানায় রয়েছেন সেই দিলীপ ঘোষই। যদিও এ প্রসঙ্গে এখনও মুখ খোলেননি বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।

    বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই গতকাল তাঁকে তথাগত রায়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব দিয়েছিলেন, ”এসব যারা বলে বেড়ান, তাঁদের শিক্ষা নিয়েই তো প্রশ্ন উঠে যায়। রামকৃষ্ণ দেব, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথাগত ভাবে খুব বেশী পড়াশোনা না করলেও গোটা বিশ্ব তাঁদের কথা শোনে, মনে রেখেছে। রামকৃষ্ণের বই পড়ি আমরা, আমাদের জীবন তৈরি করে সেগুলি।” এরপরই দিলীপ ঘোষ সংযোজন করেন, ”এটাই ভারতের সংস্কৃতি। এটা যারা বুঝতে পারেন না, তাঁদের কিছু তো বলার নেই।”

    প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তথাগত রায়ের নিশানায় রয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননদেরও বারবার নিশানা করেছেন তথাগত। তবে, বর্তমানে তাঁর একমাত্র নিশানা দিলীপ ঘোষকে লক্ষ্য করেই। সম্প্রতি রাজ্যের চার কেন্দ্রের বিধানসভা উপনির্বাচনে ভরাডুবি হতেই দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রবীণ এই রাজনীতিক। উপনির্বাচনে বিজেপি পর্যুদস্ত হতেই তথাগত ট্যুইটে লিখেছিলেন, “দল দালালদের জন্য কোল পেতে দিয়েছিল। গলবস্ত্র হয়ে তাদের এনেছিল। যারা আদর্শের জন্য বিজেপি করত তাদের বলা হয়েছিল, এতবছর ধরে কি করেছেন, ছিঁ..ছেন ? আমরা আঠারোটা সিট এনেছি। জুলিয়াস সিজারের মতো Vini Vidi Vici। এখন ভাঁড়ামো করলে হবে ? আজকে বিজেপির শোচনীয় পরিণতি এই সবের জন্যই।” সেই ট্যুইটের সঙ্গে তিনি জুড়ে দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষের একটি ট্যুইট। যেখানে দিলীপ ‘দলের দালালদের’ বিজেপি থেকে বের করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।

    এরপরই তথাগতকে দল ছাড়ার পরামর্শ দেন দিলীপ ঘোষ। তখনই তথাগত পাল্টা প্রত্যুত্তর দেন, ”গতকাল থেকে ফোনে ফোনে জর্জরিত হয়ে গেলাম। সকলকে আশ্বস্ত করছি এই বলে, যে আমি স্বেচ্ছায় দল ছাড়ছি না। আমি আপাতত এখন সাধারণ সদস্য। এই অবস্থাতেই যাত্রার বিবেকের ভূমিকা পালন করে যাব। দল ছাড়তে পারলে সব গুপ্তকথাই ফাঁস করতে পারতাম কিন্তু এখনই তা হচ্ছে না।”এই ট্যুইটের পর এদিন ফের ট্যুইটারে অবতীর্ণ হন তথাগত। যেখানে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তিনি।