|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী এই ছোট্ট প্রাণীটি তথা পতঙ্গটি। তাই এটি ‘ওয়ার্ল্ডস মোস্ট লিথাল ইনসেক্টস’-এর তকমাও পেয়েছে। মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়া। যে প্যারাসাইট ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে সেটিকে বহন করে মশা। তাই মশা এত সাংঘাতিক। যদি যে কোনও ব্যক্তিকে দংশন করে তবে তার রক্তে ওই প্যারাসাইট চলে যায়। আর তখনই ওই ব্যক্তি আক্রান্ত হন।
অ্যানোফিলিস, কিউলেক্স, এডিস– এই ৩ ধরনের মশা’ই রোগজীবাণু বহন করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এরা ভেক্টর-ব্রোন ডিজিসের জীবাণু বহন করে। একটি পরিসংখ্যান জানায়, বিশ্বের প্রতি ৪ জনের ১ জন কোনও না কোনও ভাবে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হন।
তবে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই এই সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সব সময় ভালো ভাবে হাত-পা ঢাকা থাকে এমন পোশাক পরে থাকা, ঘুম বা বিশ্রামের সময়ে মশারি ব্যবহার করা, সকালে ও সন্ধে হেলায় ইনসেক্টস রিপেল্যান্ট ব্যবহার করা ইত্যাদি। লেমন ইউক্যালিপটাসের তেল দিয়েও মশা দূরে রাখা যায়।
তবে সব চেয়ে বেশি যেটা খেয়াল করতে হয় সেটা হল, বাড়ির চারপাশে কোথাও কোনও ভাবে যেন জল না জমে থাকে। জমা জল হল মশার পক্ষে স্বর্গ। আর সেই স্বর্গ থেকেইও ওরা মানবজীবন নরক করে তোলার প্রেরণা পায়।
১৮৫৭ সালে কুমায়ুনের আলমোড়াতে জন্ম। তিনি দেখান যে মশার লালাগ্রন্থিতে প্লাসমোডিয়াম জীবাণু থাকে এবং মশার কামড়ের মাধ্যমে এটি অন্য পোষকের দেহে সংক্রমিত হয়। তাঁর এই কাজের উপর ভিত্তি করে অ্যানোফিলিস মশার বংশবিস্তার রোধের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। যার ফলে বিশ্বজুড়ে বহু কোটি মানুষের প্রাণরক্ষা পেয়েছে। রস ১৯০২ সালে ম্যালেরিয়া রোগের উপরে গবেষণার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
ভারতের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ। তবে কলকাতার সঙ্গেই তাঁর বিশেষ যোগাযোগ। কর্মসূত্রে, গবেষণাসূত্রেও। এখনকার এসএসকেএম-য়ে তিনি ম্যালেরিয়া সংক্রান্ত গবেষণা করেছিলেন। সাফল্যও লাভ করেছিলেন। এই প্রতিভাবান মানুষটি ১৯৩২ সালে প্রয়াত হন। ইংলন্ডে তাঁর সমাধি আছে।