পদ্মশ্রী পুরষ্কারে সম্মানিত হচ্ছেন বাংলার দুই চিকিৎসক

নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রজাতন্ত্র দিবসের সন্ধ্যায় পদ্মশ্রী পুরষ্কারের তালিকা ঘোষণা করে কেন্দ্র সরকার। সেই তালিকায় বাংলার নাম উজ্জ্বল করেছেন বাংলার দুই চিকিৎসক, বিরাটির অরুণোদয় মণ্ডল ও বীরভূমের সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়।দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিক এলাকা গিয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষজনের নিঃস্বার্থ সেবা করে চলেছেন তাঁরা। এবার তাঁদের সেই সেবার স্বীকৃতি দিল কেন্দ্র সরকার।
এ যাবৎ বাংলার বহু চিকিৎসক পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অরুণোদয় মণ্ডল যেন অনন্য! দীর্ঘদিন ধরে নিঃস্বার্থভাবে সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। প্রতি সপ্তাহের শেষে কলকাতা থেকে ছ’ঘণ্টার পথ পেরিয়ে অরুণোদয়বাবু চলে যান সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায়। তাঁর অপেক্ষায় থাকেন কয়েক শো রোগী। তাঁদের বেশিরভাগই গরিব, দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন। শনিবার সেখানেই রাত কাটিয়ে রবিবার সকাল থেকে রোগী দেখা শুরু করেন তিনি।
বাঙুর অ্যাভিনিউতে বাড়ি অরুণোদয়বাবুর। জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল-সকাল হাসনাবাদ লোকালে উঠে পড়েন। সঙ্গে থাকে ওষুধের ব্যাগ। তার পর হাসনাবাদ স্টেশনে নেমে সেখান থেকে ভ্যান রিকসায় চেপে পৌঁছন নদীর ঘাট পর্যন্ত। নৌকায় নদী পার হয়ে বাসে দেড় ঘণ্টার পথ লেবুখালি। আবার নৌকায় রায়মঙ্গল নদী পার হয়ে দুলদুলির ঘাট। সেখান থেকে অটোতে সাহেবখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়পাড়ায় রয়েছে তাঁর ‘সুজন চিকিত্‍সা কেন্দ্র’। অরুণোদয়বাবু ‘সুন্দরবনের সুজন’ বলেই পরিচিত। শুধু প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লিখে দেওয়াই নয়। তাঁদের ওষুধও জোগারও করে দেন অরুণোদয়বাবুই। নিয়ম করে চলে রক্তদান শিবির।
এই তালিকায় রয়েছেন বাংলার আরেক কৃতী চিকিৎসক সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, বিশ্বভারতীর পাঠভবনের ছাত্র ছিলেন। পরে তিনি আরজিকর থেকে ডাক্তারি পড়েন। উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনেও পাড়ি জমান তিনি। তাঁর প্রথম কর্মক্ষেত্র বিশ্বভারতীর পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতাল। দীর্ঘদিন সেখানে ডাক্তারি করার পাশাপাশি গরীব মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। হাসপাতালে রোগী দেখার পাশাপাশি নিজের বাড়িতে এক টাকার বিনিময়ে রোগী দেখা শুরু করেন। ১৯৬৩ সাল থেকে আজও তিনি এই ভাবেই রোগী দেখে চলেছেন। সম্মানিত হওয়ার খবর পেয়ে সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি মানুষের সেবা করতে চেয়েছি। মানুষ রোগমুক্ত হয়ে ফেরে এটাই আমার শান্তি। এই পুরস্কার পেয়ে আমি কৃত্জ্ঞ।”
তারা জানান পিছিয়ে পড়া মানুষের সেবাই তাদের ধর্ম।