বিধানসভায় ভোটাভুটিতে পাশ হয়ে গেল বিধান পরিষদ প্রস্তাব

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে বিধান পরিষদ তৈরির পথে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য। মন্ত্রিসভার ছাড়পত্র আগেই মিলেছিল এবার বিধানসভায় ভোটাভুটিতে পাশ হয়ে গেল বিধান পরিষদ প্রস্তাব। মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয় অর্ধে এই প্রস্তাব পেশ করে তৃণমূল। এরপরই বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ বাঁধে। পরে অবশ্য ভোটাভুটিতে প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়।

    ২০১১ সালে রাজ্যে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর বিধানসভায় এই রিপোর্ট আনে তৃণমূল। গড়া হয়েছিল অ্যাডহক কমিটিও। প্রায় ১০ বছর পর সেই রিপোর্ট নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হল। প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ভোটাভুটি চান বিজেপি বিধায়করা। এদিন মোট ২৬৫ বিধায়ক ভোট দেন। এর মধ্যে ১৯৬ ভোট পড়ে বিলের পক্ষে। বিপক্ষে পড়ে ৬৯ ভোট। উল্লেখ্য, বিজেপি বিধায়করা ছাড়া একমাত্র আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকিও বিলের বিরোধিতায় ভোট দেন। যদিও এখনই এই বিল আইনে পরিণত হচ্ছে না। এর পর প্রস্তাবটি লোকসভা যাবে। সেখানে পাশ হলে যাবে রাজ্যসভায়। তার পর রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে বিধান পরিষদ প্রস্তাব আইনে পরিণত হবে। তবে লোকসভা বিজেপি সাংসদদের সংখ্যাধিক্য রয়েছে। ফলে এই বিল আদৌ পাশ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।

    প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেন বিজেপি বিধায়করা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমাদের বক্তারা অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায় আমাদের অভিভাবক নিজেদের কথা বলছেন, কেন বিধান পরিষদ প্রয়োজন। লোকসভা ও রাজ্যসভায় অনুমোদন। তারপর রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে হবে।” তাঁর আশঙ্কা, “বিধানসভার পর বিধান পরিষদ হলে দীর্ঘসূত্রিতা বাড়বে। দ্বিতীয়ত, আর্থিক চাপ বাড়বে। রাজনৈতিকভাবে প্রত্যাখ্যাত লোকেদের জায়গা দিতেই বিধান পরিষদ করা হচ্ছে।”

    বিলের স্বপক্ষে বলতে উঠে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিরোধী দলের কোনও বিধায়ক বললেন না, এটা সংবিধান বহির্ভূত। ১৯৫২ সালে সংবিধান অনুযায়ী বিধান পরিষদ করা হয়। ১৯৬৯ সালে বন্ধ করা হল। রাজ্যের অর্থনীতি নিয়ে বলছেন, দেশের অর্থনীতি নিয়ে বলছেন না কেন? হঠাৎ অর্থনীতি নিয়ে চিন্তায় পড়লেন কেন?” তাঁর প্রশ্ন, “সংখ্যার দিক থেকে হলে উত্তরপ্রদেশ ও কর্ণাটকে কেন বিধান পরিষদ বন্ধ করা হল না কেন? সংবিধানের বাইরে গিয়ে তো কিছু করা হচ্ছে না।” রাজ্যের মন্ত্রী আরও বলেন,” কেউ বিধানসভায় হেরে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন। এমন উদাহরণ ভুরি ভুরি আছে।” এর পরই তিনি বলেন, “বিরোধী বিধায়ক বলছেন, লোকসভায় শক্তি আছে আটকে দেব। আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, রাজ্যের ভালোর জন্য যদি কোনো ভালো কিছু করা হয়। তাহলে তো সংসদে সবকিছু আটকে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করবেন না।”