|
---|
“নতুন গতি”-র বিশেষ প্রতিবেদন: নারী শব্দ ভিন্ন মনে ভিন্ন আবেগ সৃষ্টি করে। এই আবেগ কখনও বাড়ে মনোবল, আবার কখনও আসে চোখে জল।ছোটবেলা থেকেই একটি শিশু তার মায়ের স্নেহ-ছায়ায় ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠার পর যখন এক পূর্ণ বয়স্কতা লাভ করে, তখন সে তার মা’কে কতটা শ্রদ্ধা দিয়ে সেবা দান করছে, একবিংশ শতাব্দীর দ্বারে এখন এটাই এক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছোট্ট বেলায় পুতুল খেলার মেয়েটি আজ অন্যের হাতের পুতুল। নিজের পিতৃগৃহ ত্যাগ করে এক অচেনা অজানা পুরুষকে জীবনে মানিয়ে নিয়ে তার ঘর গোছাতে ব্যস্ত থাকে। এই ঘর গোছাতে গোছাতে কখনও বা তাকে তার স্বপ্নের মানুষের কাছেই লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়।নারী দিবসে নারীদের নিয়ে কথা বলতে গেলে, এর অন্ত পাওয়া যাবে না। তবুও এটুকুই বলার, নারী শব্দ এক মানসিক তৃপ্তির পরিপূর্ণতা দেয়।
নারী “মা”, নারী “কন্যা”, নারী “ভগিনী” আবার নারী-ই সহধর্মিণী। প্রত্যেক নারি-ই “মা” রূপে পূজিত। তাই তো সম্পর্ক যাই হোক না কেন, নারীর তুলনা শুধুই “মা”।
কখনও কখনও এই নারীরা আমাদের মিথ্যে বলে। হ্যাঁ, মিথ্যে বলে! সে বউ হোক, মা হোক, মেয়ে হোক বা কোনো পরিচিতা নারী। একটু সহজ করে বলতে গেলে, আমরা পুরুষরা যখন হঠাৎ বাসায় ফিরি, তখন এই নারীরাই তাদের মুখের খাওয়ার আমাদের মুখে তুলে দেয়। ওনারা খেয়েছেন কিনা, হয়তো তা আমরা কোনোদিনই জিজ্ঞেস করি না। যদিও বা জিজ্ঞেস করি, ওনারা কখনও সখনও না খেয়েও বলেন খেয়েছি। বলেন আমাদের তৃপ্ত করতে। আমাদের খাইয়ে নারীদের মনে মনে যে তৃপ্তির জোয়ারে ভাসে, তা হয়তো আমরা বুঝি না। এবার মনে হতে পারে, নারীরাও মিথ্যে বলে!
পুরুষ শাসিত এই সমাজে নারী মানে একাধারে লালসার শিকার। সে কৈশোরে বালিকা হোক, বা যৌবনের যুবতী রমনী। আমাদের সমাজে মেয়েদের তথা নারীদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর থাকলেও, তা আমরাই সেই কঠোরতা লঙ্ঘন করি। যে হাতে আমাদের সমাজ মায়ের আরাধনা করি, সেই হাতেই সমাজের একাংশ নারী নিধনে মেতে উঠি। মাঝে মাঝে মনে হয়, রাবণ রাজা আজও মনের মাঝে বিরাজমান।
ভারতীয় রীতি, নীতি, সংস্কৃতি ভুলে আমরা পাশ্চাত্য সভ্যতার দিকে ক্রমাগত অগ্রসর হচ্ছি। মেতে উঠেছি পরকীয়া প্রেমে। যা ভারতীয় আইনে এই পরকীয়া আজ স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু প্রকৃত দৃষ্টিতে আমাদের স্বাধীন ভারতে নারী কি সত্যিই আজ স্বাধীন?
নারীরা মুখ বুজে বহু লাঞ্ছনা, গঞ্জনা সহ্য করে। সহ্য করে থাকাটা একদিক থেকে হয়তো এটা তাদের মারাত্মক ভুল। নারীরা আজও সহানুভূতির সঙ্গে সহ্যের বাঁধ গড়ে তোলে। নারী মানেই প্রকৃতি। প্রকৃতিকে আমরা যা দিই, তার চেয়ে ফেরত পাই বহু শত। একটু শ্রদ্ধা ও একটু ভালবাসা দিলে, আমরা তাদের থেকে যা পাব, তা হয়তো স্বপ্নের বাইরে। নারী নিয়ে লেখা বা বলার অন্ত নেই, একথা প্রথমেই বলা হয়েছে। শুধু একটা কথা, শুধু নারী দিবসে নারী শ্রদ্ধা নয়, জীবনের প্রতিটি দিনকে গড়ে তুলি নারী দিবস।