বায়ু দূষণের নিরিখে রাজ্যের শহর হাওড়া চিন্তা বাড়াচ্ছে

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: হাওড়ার ‘হাওয়া খারাপ’! বায়ু দূষণের নিরিখে রাজ্যের এই শহর চিন্তা বাড়াচ্ছে। রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের তরফে যে ‘বাতাসের গুণমানের সূচক’ প্রকাশ করা হয় করা হয় তাতে দেখা যাচ্ছে, হাওড়ার ঘুসুড়িতে বাতাসের গুণমান ‘অত্যন্ত খারাপ’। সেখানে বাতাসে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম ২.৫) ৩২৩। পর্ষদের ধূলিকণা মাপার যন্ত্রে এই ছবি ধরা পড়েছে। তুলনায় হাওড়ার অন্য দুই এলাকা বেলুড় মঠ এবং পদ্মপুকুরে বাতাস অপেক্ষাকৃত ভালো বলে জানা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার হাওড়ার বাতাসের গুণমান সংক্রান্ত এই চিত্র সামনে আসতেই আলোড়ন পড়েছে।

    উল্লেখযোগ্যভাবে, হাওড়ার থেকে মান ভালো কলকাতার হাওয়ার। বৃহস্পতিবার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রক পর্যদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত‘বাতাসের গুণমানের সূচক’অনুযায়ী, কলকাতায় রবীন্দ্রভারতী এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল স্টেশন লাগোয়া চত্বরের হাওয়ার মান ‘খারাপ’। সেখানে বাতাসে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম ২.৫) যথাক্রমে ২৬৫ এবং ২৪৪। তবে ফোর্ট উইলিয়াম, যাদবপুর, রবীন্দ্র সরোবরের কাছে বাতাসের মান ‘সন্তোষজনক’।

    বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাতাসের মান খারাপ হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সাধারণ মানুষ। বায়ু দূষণের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়ে শিশু এবং বয়স্কদের উপরে। চিকিৎসকদের একাংশের কথায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা অনেকাংশেই কমে যায়। তার উপরে কোভিডে আক্রান্ত প্রবীণদের ফুসফুসে প্রভাব ফেলেছে ভাইরাস। ফলে বাতাসের গুণমান খারাপ হলে তা বয়স্কদের জন্য শ্বাসকষ্ট, হাঁফানির মতো রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি শিশুদের অপরিণত ফুসফুসেও বায়ু দূষণের প্রভাব পড়তে পারে। বায়ু দূষণের ফল সুদূরপ্রসারী হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।

    উল্লেখ্য, রাজধানী দিল্লির বায়ু দূষণ চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিল বিশেষজ্ঞ মহলের কপালে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু, বৃহস্পতিবারের ‘বাতাসের গুণমানের সূচক’ অনুযায়ী, ঘুসুড়ি বায়ু দূষণের নিরিখে টেক্কা দিচ্ছে দিল্লিকেও! বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার দেওয়া তথ্য বলছে, দিল্লিতে বাতাসে সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ ১৮৮.২(পিএম ২.৫)। সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, মুম্বই, দিল্লি, মজঃফরনগরকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল হাওড়ার ঘুসুড়ি। কী কারণে হাওড়ায় বায়ু দূষণের বাড়বাড়ন্ত? তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও মন্তব্য করতে চাননি পরিবেশবিদরা। হাওড়ার দূষণ প্রসঙ্গে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, “কী কারণে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়েছে, তা জানার জন্য বিস্তারিত তথ্য ও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।” পাশাপাশি বিহারের মুঙ্গের, শিল্প নগরি মুম্বই, দিল্লি, মজঃফরনগরের বাতাসে দূষণের মাত্রাও বেশ উদ্বেগজনক বলে জানা যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই সময় ডিজিটালকে বলেন, “ইতিমধ্যেই দূষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। “