আর থাকতে পারলাম না, গেছিলাম সাগর দত্ত মেডিকেলে বললেন, কুনাল ঘোষ

জাহির হোসেন মন্ডল,কলকাতা ঃ আর থাকতে পারলাম না, গেছিলাম সাগর দত্ত মেডিকেলে।

    আজ শনিবার গেছিলাম সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখনকার অধ্যক্ষা ডাঃ হাসি দাশগুপ্তর সঙ্গে বৈঠক করেছি। সে সময়ে ছিলেন এমএসভিপি সহ একাধিক সিনিয়রও।

    দেখলাম একটি শিশুমৃত্যু নিয়ে চাপানউতোর চলছে। মর্মান্তিক ঘটনা। প্রচার হচ্ছে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্মঘটের জন্য মৃত্যু। আসলে দেখলাম বাচ্চাটি এখানেই ছিল। এই হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক ভেনটিলেটর নেই বলেই অন্যত্র পাঠানোর প্রয়োজন হয়।

     

    অথচ এই হাসপাতালের উন্নয়নে আমি MP LAD তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। ২০১৩ সালে টাকা গেছিল। পাঁচ বছর টাকা ফেলে রেখে ২০১৮ সালে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়। যে হাসপাতালে নবজাতকদের জন্য ভেনটিলেটর নেই, তারা কোন্ কারণে টাকা ফেরায়? যদি ঐ টাকায় এসব কেনা যেত, তাহলে হয়ত বাচ্চাটি বাঁচতেও পারত। সরকারি দলের সঙ্গে আমার দূরত্বের কারণে আমার সাংসদ তহবিলের টাকায় মানুষের কাজ করা হবে না, এটা কুৎসিত রাজনীতি। কেন এই টাকা ফেরত দেওয়া হল?

    এখনকার অধ্যক্ষা খুব বিস্তারিত জানেন না। একবার বললেন, স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ ছিল টাকা ফেরতের। একবার বললেন, শুনেছিলেন লাইব্রেরি হবে। তার গাইডলাইন না থাকায় কাজ হয় নি।
    অন্য সিনিয়রদের কাছ থেকেও শুনলাম রোগী কল্যাণ সমিতিতে একাধিকবার বিষয়টি আলোচিত হয়েছিল। ঠিক হয় টাকা ফেরত হবে।

    রোগী কল্যাণ সমিতির আগের কর্তা মদন মিত্র, এখন তাপস রায়।

    অধ্যক্ষার সঙ্গে আরও কিছু কথা হয় তার। এখন আবার সেই টাকা কাজে লাগানো যায় কিনা, আইনি পথ কী বলছে, খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু টাকা ফেরতের পর প্রক্রিয়াটি জটিল।

    নিচে জুনিয়র ডক্তাদের ধর্ণা চলছিল। তাঁরা কেউ তাকে বাধা দেন নি। আমি জানিয়ে আসি তাঁদের কর্মসূচির বিরুদ্ধে বা কোনো মধ্যস্থতায় আমি আসি নি। আমি এসেছি কেন আমার টাকায় কাজ করা হয় নি, কর্তৃপক্ষের কাছে তার কৈফিয়ত চাইতে। যদি সেই টাকায় ভেন্টিলেটর কেনা হত, হয়ত বাচ্চাটা আজ মারা যেত না।

    পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গোটা বিষয়টি জানান। সেই সঙ্গে বলেন অন্যায় রাজনীতি হয়েছে। বহু সাংসদ খরচ করে না। অনেক প্রতিষ্ঠান অর্থাভাবে জরুরি কাজ করতে পারে না। এখানে আমি চেষ্টা করে টাকা বরাদ্দ করলেও টাকা ফেরত পাঠানো হয়। দলবাজির রাজনীতির নির্লজ্জ উদাহরণ। আমি মুখ্যমন্ত্রীকেও লিখিতভাবে জানাব। তদন্ত চাইব। যে অধ্যক্ষ টাকা ফেরত পাঠান, শিশুমৃত্যুতে তিনিও পরোক্ষভাবে দায়ী। তিনি যেখানেই থাকুন, রাজনীতি করে টাকা ফেরানোর জন্য তাঁকে সরকারি কাজ থেকে বরখাস্ত করা হোক।

    হাসপাতালের উন্নয়নে আমি টাকা দিয়েছিলাম। যেকোন কাজ করা যেত। তা না করে পাঁচ বছর টাকা ফেলে রেখে ফেরত দেওয়া হল। ভাবা যায় না! সাংসদ হিসেবে আমাকে অন্ধকারে রেখে টাকা ফেরত হয়েছে। এটা অন্যায়।

    টাকা ফেরত সংক্রান্ত সরকারি চিঠিটি তিনি হাসপাতালে দাঁড়িয়েই সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দিয়েছেন।

    অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন হাসপাতালে অচলাবস্থা মিটুক। মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএমে না গিয়ে প্রথমেই যদি আহত পরিবহকে দেখতে যেতেন ও এনআরএসে চলে যেতেন, জটিলতা বাড়ত না। এখন ইগোর লড়াইয়ের সময় না। ডাক্তারদের দাবি সঠিক। নিরাপত্তা দরকার। আবার তাঁদের ধর্মঘটে মানুষের সঙ্কট। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কাছে যান বা তাঁরা নবান্নে যান, কিছু একটা হোক। মায়ের মন নিয়ে সমস্যা মেটান মুখ্যমন্ত্রী। তিনিই পুলিশমন্ত্রী, তিনিই স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কেন জল এতদূর গড়াবে?