|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা :বাংলার মেডিক্যাল কলেজ গুলোয় ৮৫% রাজ্য কোটায় মেডিকেলে ভর্তির ক্ষেত্রে “ডোমিসাইল বি” র সুযোগ নিয়ে ডাক্তারিতে ভর্তি হয় বিহার-ইউপি সহ অন্যান্য রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা, বাংলার মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছে নিজের মাটিতেই। বাংলা পক্ষ এই “ডোমিসাইল বি” বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীও প্রকাশ্যে দুবার ডোমিসাইল বি বাতিলের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তবুও আজও তা কার্যকর হয়নি।
আজ প্রতিবাদে বাংলার মাননীয় স্বাস্থ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। প্রতিটা বিষয় নিয়ে মাননীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা ডাঃ দেবাশীষ ভট্টাচার্যের সাথে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয় বাংলা পক্ষর প্রতিনিধি দলের৷ কাস্ট সার্টিফিকেট এবং ডোমিসাইল সার্টিফিকেটের অনিয়মের নানা প্রমাণ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাংলা পক্ষর চার জনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন শীর্ষ পরিষদ সদস্য তথা সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক প্রবাল চক্রবর্তী, উত্তর চব্বিশ পরগনা শিল্পাঞ্চলের সম্পাদক মামুদ আলি মন্ডল এবং ছাত্র পক্ষর রাণা ভট্টাচার্য। ৫ বছর আন্দোলন চলছে। তারপরও এখনও ডোমিসাইল বি বাতিল কেন হয়নি? স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছে আবেদন জানানো হয় যাতে এবছরই সমস্যার সমাধান হয়। এভাবে ৩০০-৪০০ টা রাজ্য কোটার মেডিক্যাল সিট ভিন রাজ্যের ছেলেমেয়েদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। এবার সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবে বাংলা পক্ষ।
সর্ব ভারতীয় NEET পরীক্ষা চালু হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের হাতে ৮৫% আসন আছে, যাতে ভর্তি হবে ডোমিসাইল এ- এর মাধ্যমে। বাংলা ছাড়া আর কোনো রাজ্যে “ডোমিসাইল বি” নেই। এই “ডোমিসাইল বি” র মাধ্যমে প্রতিবছর এরাজ্যে মেডিক্যালে ভর্তিতে দূর্নীতি ঘটছে। পাশ্ববর্তী বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশের ছাত্রছাত্রী যাদের কোনভাবেই বাংলার সঙ্গে কোন যোগ নেই, তারাও অন্যায় ভাবে এই “ডোমিসাইল বি” র সুবিধা নিচ্ছে ও বাংলার ছাত্রছাত্রীদের প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে। আমরা দেখেছি SC কোটার ক্ষেত্রেও দূর্নীতি। অন্যরাজ্যের তপশীল ভুক্ত জাতি, এমনকি জেনেরাল কাস্টের ছাত্র-ছাত্রীরাও অনৈতিক ভাবে এরাজ্যে তপশিলী সংরক্ষণের সুবিধা পেয়েছে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে মেডিক্যালে ভর্তিতে এই অস্বচ্ছতা দূর করার জন্য আমাদের দাবি সমূহ-
১) অন্যান্য সব রাজ্যের মতো বাংলাতেও ৮৫% রাজ্য কোটায় মেডিক্যালে ভর্তিতে “ডোমিসাইল বি” অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২) মেডিক্যালে ভর্তিতে তদারকি করতে একটি বিশেষ কমিশন গঠন করতে হবে। যারা প্রতিটা ছাত্র-ছাত্রীর ডোমিসাইল সার্টিফিকেট ও কাস্ট সার্টিফিকেট খতিয়ে দেখবে। ঠিকানা এবং কাস্ট সার্টিফিকেটের পুলিস ভেরিফিকেশনের দাবি জানাই।
৩) জাল ডোমিসাইল সার্টিফিকেট আটকাতে কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে। রাজ্যের যে সমস্ত অফিসার এই সমস্ত ভুয়ো ডোমিসাইল সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪) বাংলায় SC তালিকায় যাতে কোনভাবেই দূর্নীতি করে বাইরের রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা ঢুকতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫) কেন্দ্র সরকারি আমলা, রাজ্য সরকারি আমলা সহ যাদের ট্রান্সফার যোগ্য রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারি চাকরি তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য মেডিক্যালে ৮৫% রাজ্য কোটায় ভর্তিতে অন্যান্য রাজ্যের মতো বিশেষ ছাড় থাক। এর জন্য “ডোমিসাইল বি” র কোনো দরকার নেই।
৬) মেডিক্যালে ভর্তিতে “মপ আপ” রাউন্ডে স্বচ্ছতা প্রয়োজন। মপ আপ রাউন্ডে ওয়েটিং এ থাকা সকলকে বসতে দিতে হবে।
এছাড়া কর্মসূচীতে হাজির ছিলেন উত্তর ২৪ শহরাঞ্চলের জেলা সম্পাদক পিন্টু রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ সম্পাদক হুমায়ুন মোল্লা, উত্তর ২৪ পরগনা গ্রামীনের পর্যবেক্ষক অভিজিৎ দে সহ বাংলা পক্ষ ও বাংলা ছাত্র পক্ষর সদস্য-সমর্থকরা।