|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক:- মহাশক্তিই হল সৃষ্টির আধার। ত্রিগুণাশক্তি মহামায়ার আরাধনায় দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে বাসন্তী পুজো। ব্রহ্মপুরাণ অনুযায়ী নবরাত্রির প্রথম দিন আদ্যাশক্তি প্রকট হন। তাঁর আদেশেই স্বয়ং ব্রহ্মা চৈত্র শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে সৃষ্টির নির্মাণ শুরু করেন। হিন্দু ধর্মানুসারে সেই সৃষ্টিকে রক্ষা করতে রক্ষাকর্তা বিষ্ণু বিভিন্ন সময়ে দশাবতার রূপ ধারণ করেছিলেন। মৎস্য পুরাণ অনুযায়ী চৈত্র নবরাত্রির তৃতীয় দিন বিষ্ণু মৎস্য অবতার ধারণ করেন। এই নবরাত্রিতেই আবার রাম রূপে নিজের সপ্তম অবতারে প্রতিভাত হয়েছিলেন বিষ্ণু। এ কারণে চৈত্র মাসের এই নবরাত্রির মাহাত্ম্য বৃদ্ধি পায়। এই ন’দিন দুর্গা নয়টি রূপে আরাধ্যা হয়ে থাকেন জগতে। বলা হয় নবরাত্রিতে দুর্গা মন্ত্র জপ করলে বিশেষ মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। ভক্তের দুঃখ দুর্দশা নাশ করেন দেবী। বিপদকালে অশুভ শক্তির বিনাশের উদ্দেশ্যে আদ্যাশক্তির আরাধনা পুরাকাল থেকেই চলে আসছে।মহাপুরুষরাও তাই করে এসেছেন। রামায়ণ অনুসারে, অশুভ শক্তির বিনাশের উদ্দেশ্যে শ্রীরামচন্দ্র শরৎকালে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন, যা অকাল বোধন হিসেবে খ্যাত। আর পুরাণ অনুযায়ী, চন্দ্র বংশীয় রাজা সুরথ বসন্ত কালে দেবী দুর্গার যে আরাধনা করেছিলেন তা বাসন্তী পুজো নামে খ্যাত। কালের পার্থক্য হলেও আরাধনা কিন্তু সেই আদ্যাশক্তি মহামায়ারই করা হয়ে থাকে।নবরাত্রির প্রথম দিনে পুজিতা হয়ে থাকেন মহামায়ার শৈলপুত্রী রূপ। আর তাই এদিন বিভিন্ন ফলই সাজিয়ে দেওয়া হয় নৈবেদ্যতে। শৈলপুত্রী হলেন হিমালয়ের কন্যা। এদিন ঘি আর দুধ দিয়ে প্রসাদ বানিয়ে তা নিবেদন করা হয়। মনে করা হয় এতে রোগ জ্বালা দূর হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আর্শীবাদও পাওয়া যায়। শরৎকালে শারদীয়া দুর্গা পূজা, আর বসন্ত কালে দেবীর আরাধনা বাসন্তী পূজা হিসেবে প্রসিদ্ধ। উভয় পূজার রীতিও প্রায় একই। ইতিহাস বলছে, রামচন্দ্র শরৎ কালে অকাল বোধন করলেও চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের বাসন্তী পুজোই প্রকৃত দুর্গা পুজো।