ভরতপুরে প্রার্থী হুমায়ুন কবিরকে নিয়ে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব

 

    জৈদুল সেখ,নতুন গতি, ভরতপুর:

    ভরতপুরে খেলা জমল সিজার বনাম হুমায়ুের
    ভরতপুরে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আজাহারউদ্দিন ওরফে সিজার বরাবরই সংবাদ শিরোনামে এলাকায় গোষ্ঠী কোন্দলের সুবাদে। এলাকাউ দলের দাপুটে নেতাও। একুশে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবেও উঠে এসেছিল তার নাম। কিন্তু ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দলনেত্রী কালীঘাট থেকে ঘোষণা করেন হুমায়ুন কবীরের নাম।

    বিধানসভা প্রার্থীর এক নাম্বার দাবিদার সিজার ভালোভাবে নেননি নতুন প্রার্থীর খবর। ভরতপুরে ভরদুপুরে সিজার প্যাঁচে হুমায়ুন। ভরতপুর বিধানসভার তৃণমূলের প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের সমর্থনে কর্মীসভা আয়োজন করা হলো দুটি জায়গায়। একটি কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয় সালার মহাজন পাড়ার একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে এবং অন্যটি উজুনিয়া আল আমিন মিশনের মাঠে। সালার মহাজন পাড়ার অনুষ্ঠান বাড়ির কর্মীসভায় তৃণমূল প্রার্থী হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন এছাড়া ও উপস্থিত ছিলেন ভরতপুর ১নং ও ভরতপুর ২নং ব্লকের যুব তৃণমূলের সভাপতি গন ও ভরতপুর ১নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও কর্মীসমর্থকরা। উপস্থিত ছিলেন না ভরতপুর ১নং ও ভরতপুর ২নং ব্লকের সভাপতি জেলা পরিষদের সদস্য এবং পঞ্চায়েতের প্রধানরা। অন্যদিকে ভরতপুরের দুই ব্লকের তিন জন সভাপতি ও ত্রিস্তরীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে ডাকা কর্মীসভায় হাজির হলেন না প্রার্থী হুমায়ুন কবির। প্রার্থী না আসায় ক্ষোভ তৈরি হয় দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে।
    সভা, পালটা সভা; মিছিল , পালটা মিছিলে বৃহস্পতিবার ‘খেলা’ জমল ভরতপুরে। বৃহস্পতিবার ভরতপুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের ডাকা নির্বাচনী বৈঠক কার্যত বয়কট করলেন বিধানসভার তিন ব্লক সভাপতি , পঞ্চায়েত প্রধান, জন প্রতিনিধিরা। দলীয় পতাকা , ফ্লেক্সে পার্থীর নাম নিয়ে কিছু দূরে মাঠে জনপ্রতিনিধিদের ডেকে সভা করলেন আজাহারউদ্দিন সিজার।

    এদিন অবশ্য দুই সভাতেই হাজির ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কোঅর্ডিনেটার অশোক দাস। তবে , দুই কিলোমিটারের দূরত্বে যেন তৃণমূলের দুই মেরু।
    এদিন উজুনিয়ায় সভায় ছিলেন না প্রার্থী।
    “প্রার্থী আমাকে ফোন করেন নি”, উজুনিয়ার মাঠে সভা থেকে বললেন অভিমানী সিজার।
    প্রার্থী কথা বলেননি জনপ্রতিনিধিদের সাথেও।
    সেই নিয়েও ক্ষোভ জানান সিজার। বলেন, এদিন মিটিং হবে, সব বুথের পাঁচজন করে থাকবেন জানানো হয়েছিল হুমায়ুন করবীরকে। কিন্তু আসেননি হুমায়ুন।সভার ফ্লেক্সে অবশ্য প্রধান বক্তা হিসেবেই নাম ছিল হুমায়ুন কবীরের।

    এরপরই সিজারের হুমকি , “ওয়েট করুন, খেলা বাকি আছে। জিততে হবে হবে এমএলএ, না জিতলে এমএলএ নয়”। সরাসরি চ্যালেঞ্জ , ” জেতাবে কে ? আপনারা। যেভাবে আপনারা লোকসভা নির্বাচনে অপুর্ব সরকারকে জিতিয়েছিলেন”।
    এর মাধ্যমে অপুর্ব সরকারের হারের কথাই মনে করিয়ে দেন সিজার। তাহল কি হারানোর চ্যালেঞ্জ দিলেন হুমায়ুনকে ?
    এদিন অশোক দাসকে পাশে বসিয়ে আজারউদ্দিন সিজারের সাফ বয়ান ,” আমাদের অপমান করা হয়েছে। হুমায়ুন কবীর যেভাবে রেজিনগরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব করেন, একই সিস্টেমে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব করার চেষ্টা করছেন”। প্রার্থী কংগ্রেসীদের নিয়ে ঘুরছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। একই সাথে সংযোজন, দল থেকে বহিষ্কার করা হলে “ভাববো”।
    অশোক দাস ও আজাহারউদ্দিন সিজার
    হুমায়ুন কবিরের অবশ্য পাল্টা, ” দলের মূল স্রোতকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে তার পরিণতি কী হতে পারে সময় কথা বলবে” । হুমায়ুনের পাশে এদিন ছিলেন নজরুল ইসলাম ওরফে টারজেন।

    আর দুই সভাতেই যিনি ছিলেন কী বলছেন সেই অশোক দাস। অশোক দাসের ব্যাখ্যা, ” এদের এই দ্বন্দ্বটা সামনে এসেছে , দুটো মিটিং হচ্ছে একই দিনে, এটাকে অস্বীকার করার উপায় নেই”। তবে দল তাঁকে কোঅর্ডিনেটার করার সিজার, নুর আলম, সঞ্জয় সরখেল সকলে নিয়ে হুমায়ুন কবীরের সাথে বসে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করানোর চেষ্টা করবেন বলেও জানান অশোক দাস।