বাই-সাইকেলের পেটুল মারে কলকাতা থেকে চাঁচল ফিরল দুই বন্ধু, করোনা ইতিহাস গড়ছে

উজির আলী,নতুনগতি,চাঁচল: ৩০ মার্চ

    করোনা মহামারী ইতিহাস করছে ডিজিটাল যুগে। প্রাচীরের ওপার চীন দেশ থেকে সূত্রপাত করোন ভাইরাস। এর পরেই ছড়িয়ে পরে গোটা বিশ্বে। লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো। এই মহামারি রুখতে বিভিন্ন দেশের সরকার লকডাউনেরও ঘোষনা করেছেন। থেমে থাকেননি ভারত সরকারও। করোনা মুক্ত ভারত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ‍্যে লোকডাউন ঘোষনা করেন। এই লকডাউন ঘোষনাতেই রুজির টানে ভিনরাজ‍্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের 

    মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে বলাবাহুল‍্য।
    শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে চায়, গ্রামের পরিবারের কাছে সাহায্যের জন‍্য কাকুতি মিনতি করছেন। এমনকি কেঁদেও ফেলেছেন অনেকে। তবে উপায় নেই,লকডাউনে সমস্ত গণপরিবহন স্থগিত।
    তবে থেমে থাকেনি কলকাতায় নির্মান কর্মীর কাজ করতে যাওয়া মালদহের চাঁচলের দুই যুবক। দুই বন্ধু হিরা সেখ (২৫) ও সালাম আলী(১৮)। এরা দুজনেই ইতিহাস তৈরী করল মালদহের চাঁচলে।

    জানা যায়,এদের বাড়ি চাঁচল ১ নং ব্লকের হাজাতপুর গ্রামে। বাস-ট্রেন বন্ধ। পকেটে বেশী টাকাও নেই যে চড়া ভাড়ায় গাড়ি করে বাড়ি ফিরবে। একদিকে লকডাউন ঘোষনা, পরিবারও বড় উদ্বিগ্নে ছিল।
    দুই বন্ধু বাড়ি ফেরার জেদ থেমে থাকল না না। তারা জানান,শনিবার দুপুরের এক প‍্যাকেট মুড়ি ও জলের বোতল নিয়ে বেরিয়ে পরে কলকাতার নিউটাউন থেকে।

    তবে কোনো পেট্রল চালিত বাহনে নয়! ডিজিটাল যুগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া বাই সাইকেল একমাত্র ভরসা হয়েছিল তাদের। ১২ নং জাতীয় সড়ক ধরে দফায় দফায় এক সাইকেলে পেটুল মারে যাত্রা শুরু করল দুই বন্ধু। একদিকে লকডাউন, নিঃশব্দ শুনশান গোটা রাজ‍্য। তাই তাদের বিভিন্ন জেলা গুলির সীমান্ত নাকা চেকিং এর শিকার হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

    সালাম বয়সে ছোটো তাই হিরা সেখ বেশী সময় ধরে সাইকেল চালিয়েছে বলে খবর। ফারাক্কা সেতুর উপর তারা সাইকেল চালাবে স্বপ্নেও ভাবেনি তারা। তবে করোনা তাদের এমতাবস্থা বাস্তবরূপে পরিনত করল। সাইকেল চালিয় রাতের বেলা শহরের ফুটপাতে তারা বিশ্রাম নিয়েছেন বলে জানায়। তবে ৩৮৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ৭২ ঘন্টা পর যাত্রা শেষ হল তাদের। বাড়ি ঢুকতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে তারা সোমবার রাতে। যুবকরা বাড়ি ফিরতেই কেঁদে উঠেন পরিবারের সদস‍্যরা।
    তবে করোনা ইতিহাস তৈরী করল মালদহের চাঁচলে।