|
---|
সাইফুদ্দিন মল্লিক, নতুন গতি : গতকাল অমৃতসরের দশেরা উৎসবে ভয়াবহ দুর্ঘটনাতে সমগ্র দেশে মর্মাহত। এই দুর্ঘটনাতে এক ত্যাগ ও বলিদান ইতিহাসের পাতাতে অমর হয়ে থাকবে। এই দুর্ঘটনাতে প্রাণ কেড়ে নিয়েছে রামলীলায় রাবণের চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা দলবীর সিংহের। দলবীর ট্রেনের ধাক্কাতে মারা যায়নি, বলাবাহুল্য তিনি নিজের মানবিকতা ও আত্মত্যাগে শহীদ হয়েছে। সাত জন মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে নিজে মৃত্যুকে বরণ করেছেন। কাল্পনিক রাবণ চরিত্র বাস্তবিক, মানবিক রাম রূপে আবির্ভাব। নিজের মৃত্যু আছে জেনেও মানুষকে সাহায্য করতে গিয়ে ছিলেন।
ঘরে রয়েছে তাঁর আট মাসের সন্তান, সন্তান কোলে স্বামীকে হারিয়ে স্তম্ভিত স্ত্রী। পুত্রকে হারিয়ে বাক্যহারা মা। দলবীরের মা জানিয়েছেন, প্রতিবছরই দশেরাতে রামলীলায় তাঁর ছেলে অংশ নিতেন। এই বছরই প্রথম দলবীর রাবণ সাজেন। অন্যান্য বছর তাঁকে হনুমান, রামচন্দ্র, লক্ষ্মণের চরিত্রে দেখা গিয়েছে। দলবীরের ভাই বলবীর জানিয়েছেন, দাদা অন্যদের সাহায্য করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন। দশেরা পালন করে রাবণের চরিত্রে অভিনয়ের জন্যে ট্রফি নিতে গিয়েছিলেন (অভিনেতা) রাবণ। সেসময়ই দলবীর দেখতে পান দ্রুত গতিতে ছুটে আসছে ট্রেন। সাত-আটজনকে তিনি রেললাইনের ওপর থেকে সরান। দুর্ঘটনাবশত ওই সময়ই তাঁর পা আটকে যায় রেললাইনে। দলবীরের পরিবারের তিনিই ছিলেন একমাত্র রোজগেরে সদস্য।
ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়েছেন সদ্য সন্তানহারা মা। তাঁর দাবি, ভোটের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাঁদের কাছে আসেন সাহায্য চাইতে। এবার তিনি তাঁদের কাছে সাহায্য চাইছেন, বিচার দাবি করেছেন ছেলের অকালমৃত্যুর জন্যে। আট মাসের শিশু আজ পিতৃহারা হয়েছে। দলবীরের স্ত্রীকে অবিলম্বে যেন চাকরি দেওয়া হয়, দাবি সন্তানহারা মায়ের। পাঞ্জাবে আজ শোক দিবস পালন করা হচ্ছে। ইতিহাসের পাতাতে স্বাধীনতার সৈনিকদের বলিদানের মতো, বলবীরের ” মানবিক স্বাধীনতা ” বলিদানের কাহানি স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। বর্তমানে স্বার্থের সময়ে এক দেবতা মানুষ বলবীর!