বীরভূমের মল্লারপুরে ক্লাবে বিস্ফোরণের কারন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অনুব্রতের

কুমার হাজরা,মল্লারপুর: বীরভূমের মল্লারপুরের ক্লাবে বিস্ফোরণে উড়ে যায় ক্লাবের দেওয়াল। শনিবার রাত্রের ঘটনা। অগ্রদূত নামে ওই ক্লাবে কিভাবে বিস্ফোরণ হল তা নিয়ে তৈরি হয়েছে আতঙ্কের আবহ।

    পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। অনুমান করা হচ্ছে বিস্ফোরণটি বোমা মজুতের ফলেই হয়েছে। ক্লাব কতৃপক্ষ অবশ্য ক্লাবের ভেতর বোমা মজুতের কথা অস্বীকার করেছে। তাদের দাবী ক্লাবের বাইরে থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে। পুলিশ বা ক্লাব কতৃপক্ষ যাই বলুক তৃনমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের দাবী বোমা ক্লাবের ভেতরেই মজুত ছিল। ওখানে ১৫ থেকে ২০ হাজার বোমা মজুত করে রাখা ছিল। ওটা বিজেপির ক্লাব। ঝাড়খণ্ড থেকে বোমা এনে ওই ক্লাবে মজুত করে রাখা হত বলে বিস্ফোরক দাবী অনুব্রতের।

    প্রসঙ্গত, ক্লাবটিতে বিস্ফোরণ কিভাবে হল তা সঠিক ভাবে জানা যায়নি। ক্লাব কতৃপক্ষ জানিয়েছে বিস্ফোরণ ক্লাবের ভেতর থেকে হয়নি। ক্লাবের বাইরে পিছন দিক থেকে হয়েছে। বাইরের কোন দুষ্কৃতিদের কাজ হতে পারে। ক্লাবের ভেতরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়ে গেছে। এর সঠিক তদন্তেরও দাবি করেছেন ক্লাব কতৃপক্ষ। ক্লাবের মধ্যে কোন বোমা মজুত ছিল না বলেই দাবী তাঁদের। বিস্ফোরণ কিভাবে হল তা তদন্ত করবে পুলিশ।

    বিশেষ ভূমিকা সম্পন্ন ক্লাব যার উপর তলায় নিয়মিত চলত ক্লাসিক নৃত্যের স্কুল। ড্রয়িং স্কুল। জিবনাসটিক জিম ও যোগাসন চর্চার স্কুল এবং ফ্রি কোচিং সেন্টারের ক্লাস। বহু ছাত্র-ছাত্রীর উপকার তথা ভবিষ্যৎ তৈরি হতো এমন একটি ক্লাব যার নাম মল্লারপুর মেঘদুত ক্লাব। মল্লারপুর শহর ছাড়াও এলাকার সমস্ত গ্রামে ও যার সদস্য সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সামাজিক ও সার্বজনীন ক্রীড়া উৎসবে মেঘদুত ক্লাবের ভূমিকা এলাকায় সবার আগে। সেই ক্লাবে রাত্রি 1:45 নাগাদ বিস্ফোরণের ঘটনায় এলাকা কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের কারণ নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা এখন ও।

    ওই ক্লাব যদি রাজনৈতিক কার্যকলাপের উদ্দেশ্য নিয়ে সংগঠিত হত । তাহলে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ফ্রিতে কোচিং এর ক্লাস। ছবি আঁকার ক্লাস। ক্লাসিক নৃত্য ও সঙ্গীতের ক্লাস । কোনদিনই করা সম্ভব হতো না। আজ পর্যন্ত রাজনৈতিক ক্রীড়া কলাপ এর সঙ্গে যুক্ত বহু ক্লাব রয়েছে বীরভূম জেলায় । তাদের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য ও সামাজিক কর্ম কান্ডের সমাজ সেবা মূলক কর্মকাণ্ড দেখা যায় না। ওই ক্লাবের সেক্রেটারি গৌতম রায় সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা সারা বছর এলাকায় নানা সামাজিক কাজ করি। আমাদের সামাজিক সেবামূলক কাজে এলাকার মানুষ খুশি হয়ে ক্লাবের সদস্য পদে যোগদান করে চলেছে। আজ সেই ক্লাব আক্রান্ত। ঘটনায় তার দাবি, নিরপেক্ষ পুলিশি তদন্ত হোক ও দোষীরা অবিলম্বে গ্রেপ্তার হোক এবং তারা দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি পাক।

    ওই ক্লাবের সদস্য জয়ন্ত প্রামাণিক এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, সমস্ত বাধা অতিক্রম করে আমাদের আদর্শ ও সেবা মূলক কাজ কে আর ও এগিয়ে নিয়ে যাব। আপাতত নিয়মিত কোচিং ক্লাস নাচের স্কুল জিম ও যোগচর্চা এবং ছবি আঁকার স্কুল অন্যত্র সরিয়ে ক্লাবের সমস্ত বিভাগ চালু রাখার ব্যবস্থা করব। কিন্তু প্রশ্ন একটাই, কারা এই ধ্বংসাত্মক কাজ করল? এর পিছনে কোন ও রাজনৈতিক হাত আছে কিনা সেটাই দেখার।

    অন্যদিকে এই ধ্বংসাত্মক কাজ করল যারা। সেই সব দোষী ব্যক্তিদের কে মল্লারপুর থানার পুলিশ এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় এবং বিস্ফোরণের সঠিক কারণ উদ্ধার করতে বিলম্ব করায় মল্লারপুর থানার ওসি টুবাই ভৌমিক কে মল্লারপুর থানা থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে আজ সকালে। এ কথা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে বলে সূত্রের খবর।।