চারদিনেও নিভলো না গলসির তেল কারখানার বিধ্বংসী আগুন

আজিজুর রহমান,গলসি : গত মঙ্গলবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের গলসির ভাসাপুলে রাধাশ্যাম এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ নামক একটি তেল তৈরীর কারখানায় বিধ্বংসী আগুন লাগে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে এলাকার বৃহৎ রাইস ব্রান তেল তৈরীর কারখানা। যাতে পুড়ে ছাই হয়ে যায় কারখানার বৃহৎ মজুতভাণ্ডার সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। যেখানে লক্ষ লক্ষ বস্তা রাইস ব্রান মজুত ছিল বলে স্থানীয়দের প্রাথমিক অনুমান। ওই আগুন নেভাতে মঙ্গলবার দমকলের চারটি ইঞ্জিন আসে। পরদিন অর্থাৎ বুধবার সকাল থেকে দুটি দমকল ইঞ্জিন প্রচেষ্টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ওইদিন সন্ধা বেলায় আচমকা আবার দুটি সাইড দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। এরপরই সন্ধা বেলায় দমকলের আরও একটি ইঞ্জিন আসে। রাতভর প্রচেষ্টা চালিয়েও আগুন পুরোপুরি নেভাতে পারেননি দমকলকর্মীরা। বৃহস্পতিবারও চারটি দমকল ইঞ্জিন সারাদিন প্রচেষ্টা চালান। তবুও আচমকা আচমকা আগুন জ্বলে উঠছিল বলে জানা গেছে। ওইদিন সন্ধায় আবারও ভাসাপুল এলাকার আকাশ ধোঁয়ায় ভরে যায়। দমকলের পাশাপাশি ওইদিন থেকে তিন চারটি পাম্পসেট দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। তবে শুক্রবার অবদিও আগুন নেভাতে পারেনি দমকল কর্মীরা। কারখানার সিইও অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, বলেন, যতক্ষননা সমস্ত রাইস ব্রান অর্থাৎ তুষ পুড়ে ছাই হচ্ছে ততক্ষণ আগুন নিভবে না বলে মনে হচ্ছে। কারন মজুত চালের তুষে ভিতরে তেল আছে। আগুনের তাপে তুষ থেকে তেল বের হয়ে যাচ্ছে। সেই তেলে  আচমকা আগুন লেগে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আগুনের কারনে তাদের বৃহৎ মজুত সহ বহু মজুতগারের ভিতরের মেশিনপত্র পুড়ে গেছে। পাশাপাশি কারখানার বৃহৎ সেডটিও আগুনের তাপে ঝুলে নেমে গেছে। তাছাড়াও গোড়াউনের পাকা কংক্রিটের দেওয়ায় ভেঁঙে পরেছে। শুরু থেকেই দমকলবাহিনী আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবুও ওই বিধ্বংসী আগুন নিভছে না। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কারখানার ম্যানেজার অরিন্দম সাম বলেন, আগুন না নিভানো প্রযন্ত কত টাকার ক্ষতি হয়েছে তা বলা সম্ভব নয়। তার প্রাথমিক অনুমান শটসার্কিট থেকে ওই আগুন লেগেছে। তবে ঠিক কি কারণে ওই আগুন লেগেছে তা তদন্ত না হওয়া প্রযন্ত বলা সম্ভব নয়। তিনি জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরেই কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকায় শ্রমিকরাও ছুটিতে ছিল। কয়েকজন পাহাড়াদার ও কিছু শ্রমিক কারখানার ভিতরে ছিল। দুইদিন আগে তাদের স্টকে থাকা রাইস ব্রান তেল বের করে নিয়েছিলেন। ওই সময় ভিতরে মেশিনপত্রের মেনটেনেন্স এর কাজ চলছিল। কারখানা চালু অবস্থায় আগুন লাগলে শ্রমিকদের প্রানহানি ঘটতে পারত। তার দাবী, এমন ঘটনায় তারা বড়সড় ক্ষতির মুখে পরেছেন। এদিকে শুক্রবার সকালে দলকলের দুটি ইঞ্জিন আবারও আগুন নেভাতে প্রচেষ্টা চালায়। ওইদিন বিকেল প্রযন্ত আগুন পুরোপুরি ভাবে না নিভলেও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এদিকে কারখানার ভিতরে পড়ে আছে শুধু পোড়া তুষের ছাই ও যন্ত্রাংশ। আর গোটা কারখানার ভিতর জলময় হয়ে আছে। তবে এমন ঘটনার জেরে বড়সড় ক্ষতির মুখে পরেছেন গলসির ভাসাপুলের রাধেশ্যাম এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ কারখানা কতৃপক্ষ।