“চেতনা উৎসব”সেহরাবাজার ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের

চায়না খাতুন : ১৫জানুয়ারি,সেহরাবাজার ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট আয়োজিত নবম বর্ষে “আলো আঁধারি” পত্রিকা প্রকাশে ‘চেতনা উৎসব’ চলেছিল কয়েকদিন ধরে। আজ পনেরই জানুয়ারী “আলো আঁধারি” পত্রিকার সম্পাদক মোল্লা রবিয়েল হোসেন মহাশয়ের আমন্ত্রণে ও ছোট গল্পকার সমীর ঘোষ মহাশয়ের জন্যই আমার সেখানে উপস্থিত হওয়া। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও বিভিন্ন প্রান্তের কবিদের নিয়ে সাহিত্য মজলিসের সম্পাদক হাজী কুতুবউদ্দিন মহাশয় ‘চেতনা উৎসবের’ আয়োজন করেছিলেন। আজকের চেতনা উৎসবে এসে স্বামীজির কথা না বললেই নয়, স্বামীজি এক নতুন ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখেছিলেন — ‘যেখানে দারিদ্র্যতা মোচন ও চেতনার উন্মেষ ঘটবে’। ‘আমরা সেই শিক্ষা চাই ,যার দ্বারা চরিত্র গঠিত হয় মানব জার বাড়ে’। এই সমস্ত মূল্যবান বাণী ভারতের যুবসমাজের জন্য খুবই যথোপযুক্ত । ভারতের যুবদলের উদ্দেশ্যে ওনার বাণী – “ওঠো,জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না ” । এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্যই ছিল নতুন প্রজন্মকে সাহিত্য মুখী করে তোলা। কারন বর্তমানের ভয়াবহ সংকীর্ণতা থেকে মুক্তি পেতে রাজনৈতিক স্বাধীনতা নয়, মানসিক স্বাধীনতা বড়ো প্রয়োজন। যেটা বহুবছর আগে উপলব্ধি করেছিলেন আমাদের কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর , যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ “গীতাঞ্জলি কাব্য” গ্রন্থের বিভিন্ন ছত্রে ছত্রে। শিক্ষাই পারে ধর্মের বেড়াজাল থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে। তার জন্য প্রয়োজন মানুষের মিলিত প্রচেষ্টা । আর এই উপলব্ধি বোধ আমার চেতনা উৎসবে মিলিত হতে পেরে ।

    সাহিত্য চর্চা মানেই কেবলমাত্র নিজের ভেতরের অনুভূতি অর্থাৎ আত্মকেন্দ্রিকতার কথাকে তুলে ধরা নয়। সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়ে পেটের ক্ষুধা নয় মানুষের মনের ক্ষিদে বাড়ানো। পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখা। সমাজের পরিসরকে আরও বিস্তারিত করা। সমাজের প্রতি সকলের দায়বদ্ধতা। আর এই চেতনার বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হতে পারলেই মানুষের মানবিক চেতনার উন্মেষ ঘটবে। সেহরাবাজার রহমানিয়া ট্রাস্ট এ অনেক গুণী মানুষের উপস্থিতি, মাননীয় মোল্লা সফিকুল ইসলাম , মাননীয় বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি, বদরুল আলম, কবি সমীর ঘোষ সহ আরো অনেকে ওনাদের গঠনমূলক বক্তব্য কচিকাঁচাদের আগামীদিনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুন্দর পাথেয় । তরুণ তুর্কিদের কাছে এই মূল্যবান সাহিত্য চর্চা ও লেখালিখির প্রতি আগ্রহী হওয়াও কম গর্বের বিষয় নয় । রহমানিয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক মহাশয়দের অক্লান্ত পরিশ্রমে অসংখ্য ছাত্রদের শিক্ষাদান ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিভার অধিকারী করে তোলার প্রচেষ্টা সত্যই প্রশংসার যোগ্য। ছাত্রদের সুশীল মনোভাব, ধৈর্য্যের সাথে কবিতা থেকে শুরু করে নাট্যকাব্য, বক্তব্য শোনা। বাচ্চাদের এই শৃঙ্খলপরায়ণতা ও ওদের আচরণ সত্যিই খুব ভালো লেগেছে আমার। এই ধরনের সাহিত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হোক আমাদের সমাজের মানুষের। বর্তমান প্রজন্ম যেন এই বীজকে বহন করে নিয়ে যেতে পারে আগামী দিনে, ঈশ্বরের কাছে এটাই আমার প্রার্থনা। আজ এখানে উপস্থিত হতে পেরে এবং কর্তাব্যক্তিদের আন্তরিকতায় নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছিল। “আলো আঁধারি” পত্রিকার সফলতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক, সেহারাবাজার রহমানিয়া ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট এর মানবিক মুখপাত্রদের প্রচেষ্টায় চেতনা উৎসবের মাধ্যমে।