৬ জুলাই সাধারণ নাগরিকরা পালন করছেন কোল্ড ড্রিঙ্কস ধর্মঘট

 নতুন গতি নিউজ ডেস্ক : জল কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। জল কোনো পণ্যও নয়। জলের ওপর সবারই সমান অধিকার রয়েছে। অথচ প্রতি বছর ভারতের দু’লাখ মানুষ শুধুমাত্র পানীয় জলের অভাবেই মারা যান। নদীর জল এবং চাষের জলের বিষে অদৃশ্য মারণ ব্যাধি গ্রামের পর গ্রাম উজাড় করে দেয়। বহুজাতিক কোম্পানীগুলির স্বেচ্ছাচারিতায় এভাবেই লেখা থাকে মৃত্যু। খানিকটা এভাবেই হয়তো ভেবেছেন শ্রীরামপুর পরমেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ঈশিতা কুণ্ডু। আজ তিনি  কোকাকোলা, পেপসি সকল বোতলজাত পানীয়ের বিরুদ্ধে বনধ ডেকেছেন সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এই বনধ সমর্থন করেছেন অসংখ্য মানুষও।

    তিনি বললেন, “আমি নিজে কোল্ড ড্রিংক খেতে খুবই ভালোবাসি। কিছুদিন হল ক্রমাগত এই বড় বড় কোম্পানীগুলো কীভাবে মাটির জল শুষে নিয়ে বিপুল লাভে বিষ খাওয়াচ্ছে তা নিয়ে জানতে শুরু করেছি। একটি ৬০০ মিলিলিটারের কোক অথবা পেপসির বোতলের পানীয় তৈরিতে ৮ লিটার পরিশোধিত জল লাগে। আবার ওই পরিমাণ পানীয়ের জন্য যতোটা চিনি লাগে সেই চিনি উৎপাদনে কৃষিক্ষেত্রে ৪৫০ লিটার জল খরচ হচ্ছে। ৫ লক্ষ লিটার জল রোজ নষ্ট হচ্ছে একটি কোকাকোলা কারখানায়। দেশ জুড়ে ৫৮টি এরকম প্ল্যান্ট রয়েছে। অর্থাৎ সারাবছরে যে জল ব্যবহার করা হয়, তা হলো প্রায় ১০,৫৮৫ মিলিয়ন লিটার জল। শেষ কুড়ি বছরে শুধুমাত্র কোকাকোলা যে পরিমাণ জল ব্যবহার করেছে, তা অন্ততঃ পক্ষে একটি গোটা বছর ধরে সারা ভারতের তেষ্টা মেটাতে সক্ষম ছিল।”

    “এখানেই সমস্যা শেষ নয়। কোম্পানিগুলির যে বিপুল বর্জ্যপদার্থ তৈরি হয়, তা প্ল্যান্টের ৩ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে সকল জলের উৎসকে দূষিত করে। কেরালার পালাক্কাড, তামিলনাড়ুর থিরুনেভেলি, উত্তরপ্রদেশের মেহদিগঞ্জ জেলা ও মহারাষ্ট্রের থানে এই সমস্যায় জর্জরিত। প্রতিরোধ এবং তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে এই অঞ্চল থেকে কোকাকোলা সমস্ত প্রোডাকশন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। তবুও যে সমস্যা তারা ফেলে রেখে গেছে, তার সমাধান নেই। তাই আগামী ৬ জুলাই আমি,আমরা বনধ ডেকেছি কোকাকোলা/থাম্বস আপ/পেপসি/ডিউ/লিমকা/সেভেন আপ/স্প্রাইট ইত্যাদি পণ্যের বিরুদ্ধে।”

    মাত্র একদিনের বনধ কতোটা প্রভাব ফেলতে পারবে? এর উত্তরে ঈশিতা বলেন, “একদিনের প্রতীকী কর্মসূচি হলেও আদতে মানুষও বুঝে গিয়েছেন একদিনের বয়কটে বিশেষ লাভ নেই। তার দাবী কেউ যদি তাদের সোশাম মিডিয়া ইভেন্ট পেজটি দেখেন তাহলে বোঝা যাবে মানুষই আসলে এই বনধের ডাক দিয়েছেন।