ঐক্য বাংলা’র ক্রমাগত চাপের জেরে কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতার ম্যাচ বাংলা ভাষায় সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সোনি কর্তৃপক্ষ

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: “সব খেলার সেরা, বাঙালির তুমি ফুটবল। ” অথচ সেই ফুটবল পাগল বাঙালিকেই ফুটবলের ধারাভাষ্য শুনতে হতো ইংরেজিতে, এমনকি হিন্দিতেও। কিন্তু ‘ঐক্য বাংলা’র ক্রমাগত চাপে, কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতার ম্যাচ বাংলা ভাষায় সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সোনি কর্তৃপক্ষ।

     

     

    হঠাৎ এই বিষয়ে সরব হল কেন ‘ঐক্য বাংলা’ ?

    ঐক্য বাংলা’র সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী সুলগ্না দাশগুপ্ত জানালেন, “ফুটবল ও বাঙালি একে অন্যের পরিপূরক। অথচ এই ফুটবল পাগল বাঙালি দীর্ঘ দুই আড়াই দশক ধরে ফুটবলের স্বাদ আস্বাদন করতে হচ্ছে ইংরেজি , এমনকি হিন্দি ভাষাতেও, অথচ ধারাভাষ্যের ভাষা থেকে অদ্ভূত ভাবে বাদ পড়ে যাচ্ছে বাংলা। এই বৈষম্য ঘোচাতে ও বাঙালি যাতে তাঁর নিজের মাতৃভাষায় সমস্ত ফুটবল প্রতিযোগিতা দেখতে পারে সেই জন্যেই আমরা এই বিষয়ে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।”

    সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শ্রী অভিজিৎ গুহ নিয়োগী আরো যোগ করে বললেন, “ষাট, সত্তর এমনকি আশির দশকের মাঝামাঝি অবধিও বাঙালি ফুটবলের স্বাদ গ্রহণ করত বাংলা ধারাভাষ্যে।রেডিওতে অজয় বসুদের অমর বাংলা ধারা বিবরণী এক নজিরবিহীন ঘটনা যা ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু আশির দশকের শেষের দিক থেকেই বাঙালি তাঁর নিজের মাতৃভাষায় ফুটবল প্রতিযোগিতা দেখা থেকে বঞ্চিত। এটা কেন হবে? যে রাজ্য সবচেয়ে বেশিবার সন্তোষ প্রতিযোগিতা জিতেছে,যে রাজ্যের দুই ক্লাবের হাত ধরেই ভারতীয় ফুটবলের সামান্য পরিচিতি হয়েছে, সেই রাজ্যের ভূমিসন্তানদের ভাষাকেই ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে কেন? ”

    কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে ‘ঐক্য বাংলা’?

    অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শ্রী সৌম্য চৌধুরী বলেন, ” এই সমস্যার কথা তুলে ধরে আমরা সোনির অফিসে স্মারকলিপি প্রদান করি যদিও তারা বিভিন্ন কারণে সেই স্মারকলিপি গ্ৰহণ করে রিসিভড কপি দিতে অস্বীকার করে। এছাড়াও সোনি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া, তাদের ক্রমাগত বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে চাপে রাখা- এই কাজগুলি করে গিয়েছি আমরা। এই সমবেত সমস্ত পদক্ষেপের ফলেই আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতার সমস্ত ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচারিত হবে বাংলা ধারাভাষ্য সমেত। ”

    অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রঞ্জন কুমার সাহু অবশ্য এই সাফল্যের যাবতীয় কৃতিত্ব দিয়েছেন আর এক সদস্য যাজ্ঞ্যবল্ক সিংহকে। উনি জানালেন, “উনি এই বিষয়টা নিয়ে সেভাবে সরব না হলে, প্রতিবাদ করার কথা না জানালে, হয়তো আমরা এই বিষয়টা নিয়ে সেভাবে মাথা ঘামাতাম না এবং বাঙালি এই ক্ষেত্রেও সুপ্ত ভাবে বঞ্চিত হতে থাকত।”

    ঐক্যযোদ্ধা যাজ্ঞ্যবল্ক সিংহ বলেন যে, ” বাঙালি নিজের মাতৃভাষায় ধারাভাষ্য না শুনলে কে শুনবে? তাহলে বাঙালি ধারাভাষ্যকারই বা তৈরি হবে কি করে আর সাধারণ একটি বাঙালি ছেলে ফুটবলের খুঁটি নাটি গুলো বুঝবেই কি বা কি করে?”