|
---|
উজির আলী, নতুনগতি, চাঁচল: ০৬ এপ্রিল
প্রশাসনিক ভাবে মালদা জেলার প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েত খোলা হয়েছে হোম কোয়ারান্টিন। তবে ব্লক প্রশাসন স্কুল গুলিকেই বেছে নিয়েছেন।
মালদহের চাঁচল ২ নং ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালপাড়া হাইস্কুলেও কোয়ারান্টিন খোলা হয়েছে ব্লকের তরফে।
তবে তার আগেই এলাকার কানাইপুর জুনিয়ার হাইস্কুলে হোম কোয়ারান্টিন খুলে দিয়েছেন দুজন বাসিন্দা।
কানাইপুরের মহম্মদ আলি জিন্নাহ ও আতাউর রহমানের উদ্যোগে এই কোয়ারান্টিন যথেষ্ঠ সাড়া ফেলেছে এলাকায়। বাইরে থেকে কোনো ব্যক্তি গ্রামে ঢুকলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা সেরে সোজা নিয়ে আসা হচ্ছে কোয়ারান্টিনে।
তবে এলাকার কোনো ব্যক্তি ভিনরাজ্য থেকে গ্রামে ফেরত হয়েছে, এমনটা খবর পেলেই বাড়িতে ছুটে যায় দুই যুবক। টেনে হিচড়ে নিয়ে আসছে কোয়ারান্টিনে। জিন্নার মুখে একটাই কথা, এলাকা না দেশ বাঁচাতে আমি সক্রিয়।
ভিন ফেরতদের ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টিনে থাকতেই হবে। না হলে ওই ব্যক্তিকে গ্রাম থেকে প্রকাশ্যে তাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানান উদ্যোক্তা।
তবে নিজেদের উদ্যোগে হলেও এলাকার বিত্তবানদের কাছে চাঁদা তুলেই কোয়ারান্টিন চালাচ্ছে তারা। উল্লেখ্য, ৩০ শে মার্চ থেকে চালু করেছে কানাইপুরের হোম কোয়ারন্টিন বলে জানা গেছে।
কোয়ারান্টিনের শ্রমিকদের তিনবেলা খাওয়ার রুটিন ও বেধে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। ঘুম থেকে উঠেই সকালে চা বিস্কুট, সকাল নটা বাজলেই মুড়ি ঘুগনির আয়োজন। দুপুরে ভাতের সাথে হরেক রকম সব্জী তরকারী,ডাল,ডিম। তবে মাংস সপ্তাহের পাঁচদিনই রান্না হঋ বলে জানিয়েছেন আতাউর রহমান।
কোয়ারান্টিনের থাকা শ্রমিকরা যেন অস্বস্তি বোধ না করে, তার জন্য স্কুল মাঠে ঝোলানো হয়েছে দোলনা। সবুজ ঘাসের উপর করা হয়েছে সামাজিক দুরত্বের রেখা। সেই রেখার ভেতর বসেই শ্রমিকরা আড্ডা মারে। কোয়ারান্টিন থেকে যেন কেউ পালিয়ে না যায়, তাই দিবারাত্রের জন্য রাখা হয়েছে দাড়োয়ান। শ্রমিকদের যত্ন সহকারে রাখা হচ্ছে কোয়ারান্টিনে এমনকি পরিস্রুত পানীয় জলেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উদ্যোক্তা জিন্নাহ জানায়, বর্তমানে কোয়ারান্টিনে রয়েছে ১৭ জন ভিন ফেরত শ্রমিক। তারা সকলেই চন্দ্রপাড়া,জতমনি ও বলরামপুরের।
প্রতিদিনই ১৭ জনের পিছনে দৈনিক তিন হাজার টাকা খরচ। খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। প্রশাসনের দিকে দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন উদ্যোক্তারা যেন ব্লক প্রশাসন বিষয়টিকে খতিয়ে দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
তবে ব্লক প্রশাসনের তরফে এলাকায় কোয়ারান্টিন অন্যত্র খোলা হয়েছে।
তবুও সাহায্যের বিষয়টি আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন বিডিও অমিত কুমার সাউ।
লকডাউনে কর্মহীনতায় জর্জরিত দুস্থদের পাশেও দাড়িয়েছেন তারা।
চাঁদা আদাইয়ের টাকায় কোয়ারান্টিনের পাশাপাশি গ্রামের ১০০ দুস্থ পরিবারের মাঝে প্রতিদিনই খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন তারা।
উদ্যোক্তাদের মুখে একটাই কথা, রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের বার্তা আমাদের কানে পৌঁছেছে। তাই আমরা গ্রামে করোনা মুক্ত এলাকা গড়তে এই প্রয়াস চালিয়ে যাব। তবে বিডিও পাশাপাশি এলাকার বিত্তবানদের কাছে কিছু সাহায্যের দাবী জানিয়েছেন তারা। তাদের সমাজের এই মহৎ উদ্যৌগকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।