|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক:- মেদিনীপুর শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে নেপুরা গ্রাম। ওই এলাকার কৃষক মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ বছরের এই সময়টাতে বিভিন্ন সবজির চাষ করে থাকেন। গ্রামের পাশে থাকা মাঠে এবার আলু লাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অতিবর্ষণ জনিত কারণে বেশ কয়েক দফাতে সেই চাষ নষ্ট হয়েছে বারবার। হতাশ হয়ে আর আলু না লাগিয়ে সূর্যমুখীর বীজ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন পড়ে থাকা পাঁচ বিঘা জমিতে। জলে ডুবে থাকা এক সময়ের সেই জমিতে সূর্যমুখী এবার ব্যাপকভাবে ফলেছে। গত একমাস ধরে ফাঁকা মাঠ জুড়ে থাকা পাঁচ বিঘা জমির সেই সূর্যমুখীর রূপ দেখতে ভিড় সেলফিপ্রেমী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের।মেদিনীপুর শহর ছাড়াও ৪০ কিলোমিটার দূরে থাকা ঝাড়গ্রাম জেলার লোকজনও এই সূর্যমুখীর মাঠে এসে ভিড় করছেন ছবি তোলার জন্য। মেদিনীপুর শহর তল্লাটে নামিদামি সাজানো ঘর ছেড়ে শহরের বাসিন্দারা সাত কিলোমিটার দূরে থাকা সূর্যমুখীর মাঠকেই বিনোদনের স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রতিদিনই দুপুরের পর শয়ে শয়ে মানুষ বাইক ও চার চাকার গাড়ি নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ও ছবি তুলতে। দর্শনার্থীদের চাপে হারিয়ে যাচ্ছে সূর্যমুখীর পাশে থাকা অন্যান্য সবজির জমি, এমনকি সূর্যমুখী গাছও। তা হলেও বিষয়টিকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন চাষি তথা জমির মালিক মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ।তিনি বলেন, “বারবার ফসল নষ্ট হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে আলু বা অন্যান্য সবজি না চাষ করে এই সূর্যমুখী লাগিয়ে দিয়েছিলাম। অবাক করে এবার ফলন ভালো হয়েছে। পুরো মাঠ জুড়ে সূর্যমুখীর সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন। আমার অন্যান্য সবজি ও সূর্যমুখীর কিছুটা ক্ষতি হলেও মানুষের এই ভিড়টাতে আমি আনন্দ পাচ্ছি। বহু মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ হচ্ছে।” চাষি মৃত্যুঞ্জয় বাবু প্রতিদিনই বিকেল হলেই পর্যটকদের ভিড় দেখতে হাজির হয়ে যাচ্ছেন নিজের জমিতে। চোখের সামনে অনেকেই ফুলের গাছ মাড়িয়ে সেলফি তুললেও কাউকে বাধা দেননি। বরং পারলে দু-একটা ছোট ফুল ভেঙে ছোট বাচ্চাদের হাতে দিচ্ছেন, আনন্দে মাতছেন তাদের সঙ্গে।