হরিশ্চন্দ্রপুরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশ্ব শান্তির বার্তা

 

    হরিশ্চন্দ্রপুর,মহ:নাজিম আক্তার,২৭ ফেব্রুয়ারি:’সম্প্রতি মেলবন্ধনে গড়ে উঠুক নতুন বিশ্ব’এই বার্তাকে সঙ্গে করে সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হলো হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের বাংরুয়া-ভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতা।

    বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও বিএড কলেজ থেকে আসা অতিথি শিক্ষক শিক্ষিকা সহ স্কুলের কচি কাঁচারা। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা। তারপর একে একে শুরু হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এইদিন স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা নাচ গান আবৃত্তি সহ নানান অনুষ্ঠান তারা মঞ্চে পরিবেশন করেন।

    স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নন্দিনী কুমার দাস জানান, গত তিন বছর ধরে স্কুল কতৃপক্ষ ভাষা দিবসের দিন এই বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন, কিন্তু কারণবশত ভাষা দিবসের দিনটি অম্লান করে রাখতে আজ এই বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জানান। এইদিন স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা সম্প্রীতির বার্তা দিতে একটি ‘ইউনিটি অব ডাইভার্সিটি’ নামে এক নাটক পরিবেশন করেন। পাশাপাশি নাচ গান আবৃত্তি সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে স্কুল চত্বরে বহু মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। এক কথায় বলা যেতে পারে এই দিন শিশুদের কলরবে ভরে শিক্ষাঙ্গন।

    স্কুলের সহ শিক্ষক মহম্মদ আজম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস কচিকাঁচা ও অভিভাবকদের সামনে মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি জানান ১৯৪৫ সালের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মাতৃভাষার স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনের ডাক দেয়। পশ্চিমা সরকার পাকিস্তানী মিলিটারীদের বলে দেয়, রাস্তায় ১৪৪ ধারা জারী করতে। মিছিলের লোক দেখলেই যেন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাস্তায় মিছিল বের করে। তাদের সঙ্গে সাধারন জনগণও যোগ দেয়।

    ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী এই মাতৃভাষা আন্দোলনের মিছিলে মিলেটারীরা গুলি ছুঁড়ে ছাত্রদের হত্যা করার জন্য। এতে মারা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রফিক, শফিক,বরকতসহ জব্বার ও সালামের মত আরো অনেক জনগণ। সেই শহীদদের স্মরনে তৈরী হয় প্রথম শহীদ মিনার। ছাত্র-ছাত্রীরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের বরণ করে। কিন্তু পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীর এটা পছন্দ হলো না। পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার সেই শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে ফেলে। আবার ছাত্ররা রাস্তায় মিছিল বের করে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য। মিলেটারীরা তাদের গ্রেফতার করে জেলে নিয়ে যায়।
    এভাবে ৫৪, ৫৬, ৫৮, ৬০ সাল চলে যায়।সেই থেকে তাঁদের স্মরণে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকে।