|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : কাটোয়ার একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতার তৃণমূল নেতা জঙ্গল শেখের ছেলে সাদ্দাম শেখকে খুনের উদ্দেশ্যেই আততায়ীরা বাঁকুড়ায় গুলি চালিয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার বাঁকুড়া সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান ২০১৭-র ৬ মার্চ কাটোয়ার খাজুরডিহির বাসিন্দা সাবির শেখ খুনে অভিযুক্ত সাদ্দাম। জঙ্গলের আত্মীয় গলসির বাসিন্দা জিয়াউল হক শেখ ওরফে বাগাই বাঁকুড়ায় গিয়েছিলেন সাদ্দামকে নিয়ে আনতে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দিন বাগাইয়ের কাছেও ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। পুলিশের হাতে আসা বেশ কিছু ভিডিয়ো খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা।এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাগাই জানিয়েছে, গুলি চলার পর ও আর সাদ্দাম গাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশের একটি ঝোপে লুকিয়েছিল। সেখান থেকে পালিয়ে যায় সাদ্দাম।’ বাগাইয়ের শরীরে গুলি লাগলেও সাদ্দাম অক্ষতই থাকেন। ঝোপে লুকিয়ে থাকার সময়ে বাগাই বুঝতে পারেন, তাঁর শরীর থেকে রক্ত বার হচ্ছে। আতঙ্কে তিনি একটি পাঁচিলে উঠে পড়েন। পাঁচিল ধরে বেশ কিছুটা এসে তিনি লাফ দেন। মাটিতে দাঁড়িয়ে তাঁকে বাঁচানোর জন্য সাহায্য চান। ওই পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘সেখান থেকে বাগাইকে গুলি চলা নীল গাড়িতে তুলে আনা হয় হাসপাতালে।’ ততক্ষণে প্রায় লুটিয়ে পড়েন বাগাই। বুধবার তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। দ্রুত অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতায়। গলসি থানার দয়ালপুরের বাসিন্দা বাগাইয়ের স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য নমিতাও তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।এদিন ঘটনাস্থল কেশিয়াকোল থেকে পুলিশ একটি পিস্তল পায়। ৭ এমএম-এর ওই পিস্তল থেকে গুলি চালানো হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, এদিন একটি বাইক সমেত ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘আমরা গোটা ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চালাচ্ছি। যে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছিল তাদের মধ্যে জিয়াউল হক শেখ ওরফে বাগাই শেখকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ওর একটি জরুরি অপারেশনের প্রয়োজন রয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে এদিন সকালে একটি পিস্তল পাওয়া গিয়েছে।’ বাইক উদ্ধার ও আটক ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা তদন্তের স্বার্থে এখনই এই প্রসঙ্গে কিছু বলছি না। খুব তাড়াতাড়ি এই ঘটনার সমাধান আমরা করে ফেলব বলে মনে করছি।’গুলিতে আহত হয়েছিলেন বাগাইয়ের সঙ্গে থাকা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের শ্রমিক নেতা নুর মহম্মদ শাহ ওরফে টগর। এদিন তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার জন্য তাঁর পরিবার তদ্বির করলেও বাঁকুড়া জেলা পুলিশ তা আটকে দেয়। জেলার পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশে বাঁকুড়া থানার আইসি দেবাশিস পান্ডা বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজেই নুর মহম্মদের উন্নত চিকিৎসার কথা জানান। এরপর সেখানেই চিকিৎসা চলছে নুর মহম্মদের। সেখানে এদিন তাঁকে দীর্ঘ সময় জেরা করেন বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।