|
---|
নিজস্ব প্রতিনিধি : ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংযুক্তিকরণের মধ্যে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিষ্ঠিত দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কও। কিন্তু রাজ্য সরকার বা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা না বলেই সংযুক্তিকরণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেও সরব হয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ ঘটিয়ে চারটি করার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তার মধ্যে অন্যতম এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক এবং ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। এলাহাবাদ ব্যাঙ্ককে জুড়ে দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের সঙ্গে। ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার (ইউবিআই) সঙ্গে জুড়ছে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক। ১৮৬৫ সালে এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক এবং ১৯১৪ সালে ইউবিআই কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েও কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গ গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে একথা জানিয়ে চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, এই দু’টি ব্যাঙ্ক রাজ্যের বহু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে ঋণ দান করে। কৃষকদের ক্রডিট কার্ড, শিল্পীদের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও উপকৃত হন গ্রামাঞ্চলের বহু গরিব মানুষ। কিন্তু সংযুক্তিকরণের ফলে বহু শাখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেছেন স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সংযুক্তিকরণের প্রসঙ্গ। তিনি লিখেছেন, সেই সময় সংযুক্তিকরণের পর সারা দেশে প্রায় ৮০০ এবং পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ৮০টি শাখা বন্ধ হয়ে যায়। একই ভাবে ব্যাঙ্ক অব বরোদার সঙ্গে অন্যান্য ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণের সময়ও সারা দেশে ৮০০ থেকে ৯০০ এবং পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩০টি শাখা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন অনেকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এ রাজ্যে কর্মরত ইউবিআই-এর ৬৫৯৮ জন এবং এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ৪২০১ জন কর্মীর ভবিষ্যৎ নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, প্রধান কার্যালয় কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করা এই সব কর্মীদের অনেকে কাজ হারাতে পারেন। এ ছাড়া ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণে গোটা ব্যাঙ্কিং সেক্টরের উপরেই সঙ্কট নেমে আসতে পারে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, পর্যাপ্ত আলোচনা না করেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণ ঘটানো হল? আমাদের মতো গণতান্ত্রিক কাঠামোতে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার এবং সে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করাই দস্তুর।
সব শেষে মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, এই দুই ব্যাঙ্ককে যেন সংযুক্তিকরণ না করা হয়। একই সঙ্গে এই দুই ব্যাঙ্কের সদর কার্যালয়ও যাতে কলকাতা থেকে সরানো না হয়, সেই আবেদনও রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।