ডক্টর ম্যাডামের পরশে মুমূর্ষ রোগী ফিরে পাচ্ছে বাঁচার প্রেরণা

 

    নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক:

    বাবলু হাসান লস্কর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
    আট মাসের শিশুকে রেখে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে চম্পাহাটির ডক্টর চিত্রালেখা সরদার গাইনোকলজিস্ট। জামতলা রুরাল হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় দেখতে পান, তিন নবজাতকে ।
    জামতলা রুরাল হাসপাতলে তিন নবজাতকের জন্মের কয়েক ঘণ্টা পর এই শিশুগুলি মায়ের প্রথম বাচ্চা। এক মায়ের কথায়, বাচ্চারা প্রচন্ড কান্নাকাটি করছিল আমরা বুঝতে পারিনি যে কেন বাচ্চা কাঁদছে। আমার এই প্রথম বাচ্চা,আর আমি এমনিতেই খুবই অসুস্থ ছিলাম। হাসপাতালের এক নার্স এক এক করে তিন নবজাতকে লেবার রুমে নিয়ে যায় আর সেখানেই ডক্টর ম্যাডাম নিজের বুকের দুধ খাওয়ান। তাতেই বাচ্চার কান্না থেমে যায় । প্রসূতির সঙ্গে থাকা এক মহিলা সেই ছবি মোবাইলে তোলে । মোবাইলে তোলার পর তার ফোন থেকে তার বাড়ির ফোনে ফরওয়ার্ড করেন এই ছবি বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছালে হাসপাতালে সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগ করেন কিছু ব্যক্তি ।কিছু সময় পর চিত্রালেখা সরদারের সাথে যোগাযোগ হয়। তিনি জানান আমার বাড়িতে আট মাসের এক শিশু আছে । আমি লকডাউন এর জন্য শিশুকে নিয়ে আসতে পারিনি । আর এখানে প্রচন্ড রোগীর চাপ থাকায় আমি বাড়িতে যেতে পারছিলাম না । আমারও শারীরিক অসুবিধা হচ্ছিল তাসত্ত্বেও ডিউটি করে যাচ্ছিলাম। আমি বুঝতে পারি বাচ্চারা কেন কাঁদছে । আসলে ওদের ক্ষিদে পেয়েছে তাই কাঁদছে । আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে আমি তো মা পরে ডাক্তার। তাই নবজাতকদের একে একে লেবার রুমে নিয়ে আসতে বলি । পরে আমার বুকের দুধ খাওয়াই আর তাতেই বাচ্চারা কান্না বন্ধ করে । আমি চিকিৎসক হিসেবে এই কাজ করে নি কারণ আমি তো মা হিসাবে এই কাজ আমি করেছি। বিগত দিনে এমনই মানবিকতার নজির গড়েছিলেন জামতলা হাসপাতালের ডক্টর। পিছিয়ে পড়া সুন্দরবন লাগোয়া এই অনুন্নত হাসপাতাল । দেখা গেল এলাকার অগণিত মুমূর্ষ রোগীরা যে মুহূর্তে ডক্টর ম্যাডাম হাসপাতালে ডিউটি করেন, ভিড় জমে যায় তখন । প্রতিটি রোগীর সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার আর তাতেই এলাকার মানুষের কাছেই একটি পরিচিতি নাম ডক্টর চিত্রালেখা সরদার । প্রতিটি রোগীকে খুবই মনোযোগ সহকারে দেখেন । তিনি তাদের সঙ্গে খুব সুন্দর ব্যবহার করেন । আর এই ব্যবহারে সাধারণ মানুষ খুবই খুশি ।এমন ই ডাক্তার কে দীর্ঘদিন যাবৎ এই সুন্দরবনের প্রত্যন্ত জয়নগর রুরাল হাসপাতাল চায় । বিগত দিনে এই হাসপাতালের বদনাম থাকলেও চিত্রলেখার স্পর্শে আজ হাসপাতালের নাম মুখে মুখে । এলাকার মানুষ ডাক্তার বাবুদের খুবই ভালোবাসেন। আর এমনই ডাক্তার পেয়ে এলাকাবাসী খুবই গর্বিত।।