প্রেমিকার বাড়ি থেকে প্রেমিকের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে ব‍্যাপক চাঞ্চল‍্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের

নিজস্ব প্রতিবেদক:- প্রেমিকার বাড়ি থেকে প্রেমিকের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে ঘিরে ব‍্যাপক চাঞ্চল‍্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের মেমারীর পারিজাতনগর এলাকায়। মৃত প্রেমিকের বাড়ির লোকজন সহ এলাকার বাসিন্দারা এই মৃত‍্যুর পিছনে পরিকল্পনা রয়েছে অভিযোগ তুলে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে পথ অবরোধ করে গাছের গুঁড়ি ফেলে। মেমারী তারকেশ্বর রাস্তায় অবরোধের জেরে থমকে যায় যানবাহন চলাচল । ঘটনার খবর পেয়েই এসডিপিওর নেতৃত্বে মেমারী থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে। পুলিশের হস্তক্ষেপে ও আশ্বাসে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি । মৃত যুবকের নাম শুভ শীল (২৭)। মেমারী পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ড এর পারিজাতনগর এলাকার বাসিন্দা। আর এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই গ্রেপ্তার চার। ধৃতরা হলেন প্রিয়ঙ্কা কীর্তনিয়া, জয়মালা কীর্তনিয়া, সুনীল কীর্তনিয়া ও রাজীব কীর্তনিয়া। ধৃতদের বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালতে পেশ করা হয়। জানা গিয়েছে, মৃত যুবক শুভ শীল এর সঙ্গে মেমারীর নিমো ২ পঞ্চায়েতের উদয়পল্লী দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দার যুবতী প্রিয়াঙ্কা কীর্তনিয়ার দীর্ঘদিনের প্রনয়ের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের মাঝেই প্রেমিকার বাড়ির লোকজন তার অন‍্যত্র বিয়ে স্থির করে ফেলে। সেই খবর প্রেমিকা ফোন মারফৎ জানিয়ে দেয় প্রেমিক শুভ শীলকে। প্রেমিকার অন‍্যত্র বিয়ে হয়ে যাবে তা মানতে পারেনি প্রেমিক শুভ। উভয় পরিবারের অভিভাবকদের মধ‍্যে বিষয়টি জানাজানি হবার পর প্রেমিকার ঠিক করা বিয়ে বাতিল করা হয় । এরপরেই অশান্তি বাড়তে থাকে। গত শনিবার বিয়ে বাতিল করা হয়। মঙ্গলবার দুপুর থেকে হঠাৎ করেই বেপাত্তা হয়ে যায় প্রেমিক শুভ শীল। অনেক খোঁজা খুঁজির পরও তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।যদিও ওই দিন রাত্রে শুভ তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল বলে পরিবার সূত্রে জানা খবর। তারপর গভীর রাতে হঠাৎ প্রিয়াঙ্কার বাড়ি থেকে শুভর বাড়িতে ফোন করে জানানো হয় শুভ’র হাত বাঁধা অবস্থায় দেহ পড়ে রয়েছে । তড়িঘড়ি বাড়ির লোকজন ছুটে যায় প্রেমিকার বাড়িতে। খবর দেওয়া হয় মেমারী থানার পুলিশকে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে মেমারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভর দেহ বাড়ির কাছেই গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়। শুভর পরিবার প্রশ্ন তুলেছে যদি শুভকে ঝুলন্ত দেখা যায় তাহলে পুলিশ আসার আগেই দেহ নামালো কে ? কেন ই বা নামানো হল ? পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এরপরই প্রেমিকা প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে চড়াও হয় প্রেমিক শুভর পরিবার ও এলাকার মহিলারা। বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় তাঁরা। পাশাপাশি এই মৃত‍্যু পরিকল্পনা করে ঘটানো হয়েছে , এটা খুন এই দাবি তোলেন তারা। এরই মধ্যে মেমারী থানায় মৃত যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে চারজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্ত শুরু করে মেমারী থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রেমিকা ও তার মা, বাবা ও দাদাকে গ্রেফতার করে। তবে প্রেমিক যুবকের রহস‍্য মৃত‍্যুকে ঘিরে চাপা উত্তেজনা থাকায় পারিজাতনগরে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট।