|
---|
খাবার ও সম্পর্কের মিশ্রণ “আহা রে” : তানবির কাজি:
সিনেমা – আহা রে
অভিনয় – আরিফিন শুভ,ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত,অমৃতা চট্টোপাধ্যায়
পরিচালক – রঞ্জন ঘোষ
শোনো না আজ বিরিয়ানি খাওয়াবে?
সিনেমা দেখতে দেখতে বিরিয়ানি নিয়ে ভাবছো?
কি করবো এতো খাবার দেখাচ্ছে মুখে জল চলে আসছে।
নন্দনে আমার পিছনে বসে থাকা যুগলের এমন বাক্যালাপ এবং ছবির গল্পের বাঁধনের উপর ভিত্তি করে বলা যায়, রান্না এবং সম্পর্কের মিশ্রণে পরিচালক রঞ্জন ঘোষ “আহা রে” নামক বাঙালিয়ানার মশলায় যে খাবারটি থালায় সাজিয়েছেন তা খুবই সুস্বাদু ও প্রশংসারযোগ্য। অবশ্য সিনেমা দেখা শেষ করার পর সবাই প্রশ্ন করতেই পারেন, সত্যি কি শুধু খাবার আর সম্পর্কের গল্প? উত্তর-না। পরিচালক খাবার ও সম্পর্কের মাঝে তুলে ধরেছেন সমাজের অনেককিছু। যদি মানুষ সেগুলো বুঝতে পারে হয়তো অনেক পরিবর্তন আসতে পারে সবার ভাবনায়।
সিনেমার শুরু থেকেই সম্পর্কের বিভিন্ন দিক বিভিন্নভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ফারহাজ(আরিফিন শুভ) ও শাহিদার(অমৃতা চট্টোপাধ্যায়) পরিণতি, ফারহাজের পরিবারে সম্পর্কের টানাপোড়ন প্রথমেই আমাদের অনেককিছু শিখিয়ে যাবে। ঠিক একইভাবে বসুন্ধরার(ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত) পরিবারের গল্প, তার ব্যক্তিগত জীবনের গল্প, ঠিক-ভুল মিলিয়ে সম্পর্কের একটা লম্বা শিক্ষামূলক ক্লাস নিয়ে যায়।
যদিও খাবার গল্পকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যায় কিন্তু গল্পের নায়ক সম্পর্ক। বর্তমান সমাজে যা হারিয়ে যেতে বসেছে। একটু লক্ষ্য করলেই নিজের জীবনেই সবাই খুঁজে পাবে তারা প্রতিদিন ভুল করে চলেছে তাদের অজান্তে। এখন নতুন প্রজন্মের মাথায় চেপে বসে আছে কম্প্রোমাইজ করা মানে মাথা নত করা। কেউ কম্প্রোমাইজ করে চলতে চাই না। তার ফলশ্রুতি অতিরিক্ত পরিমাণে বিচ্ছেদ। আসলে কম্প্রোমাইজ সম্পর্ককে খুব মধুরভাবে বেঁধে রাখে। সিনেমাটি সে সিলেবাসেরও একটি অধ্যায়।
সবশেষে বলবো, “আহা রে” হলো মানুষকে মানুষের মতো ভাবতে শেখানোর এক নিদর্শন। চিত্রনাট্যে মাঝে মাঝে মোচড় গল্পের গতি বাড়িয়েছে। অন্যান্য চরিত্রে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, আলমগীর, দীপঙ্কর দে, শকুন্তলা বড়ুয়া, অনুভব পাল, শুভ্রশঙ্খ দাস নিজেদের চরিত্র খুব ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।