লকডাউনে আর্থিক সঙ্কট” সংসারের অভাব ঘোচাতে স্বপরিবারে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন মুখ্যমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক : দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় আর্থিক সঙ্কটে পরে সংসারের অভাব ঘোচাতে জেলা শাসক, মুখ্যমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে স্বপরিবারে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন জানিয়েছিলেন মালদা শহরের এক হতদরিদ্র পরিবার। শনিবার সকালে বিষয়টি জানতে পেরে অসহায় ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী কাজল গোস্বামী। ঘটনাটি ইংরেজবাজার পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজী পার্ক এলাকায়।

     

    পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে,মুখ বধির মানুষ চুমকি সিংহ। তার স্বামী ও ছিলেন মুখ ও বধির। চলতি বছরের জুলাই মাসে স্বামী প্রয়াত হন। এরপর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে স্থান না পেয়ে বাপের বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছেন ওই গৃহবধূ। বর্তমানে মূক-বধির মানুষটি সেলাই করে সংসার চালাতেন। তার বাবা সদাই সিংহ বিদ্যুৎ পর্ষদের প্রাক্তন কর্মী। তিনি পেনশন পান না। অবসর নেওয়ার পর যা টাকা পেয়েছিলেন তিন মেয়ের বিয়ে দিতে ও বাড়ি করে সমস্তটাই প্রায় খরচা হয়ে যায়। বাকি যা ছিল তা চিটফান্ডের রেখেছিলেন তাও চিটফান্ড কাণ্ডের জেরে হাতছাড়া হয়। মা মনিকা সিংহ গৃহবধূ।একমাত্র পরিবারে তিনি সক্ষম। মুখ ও বধির মেয়ে চুমকি সেলাই করে সংসার চালাতেন। টানা লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতির জেরে আর কাজ জুটছে না। সংসারের চরম অভাব। সামাজিক লজ্জার ভয়ে অভাবের কথা কাউকে বলতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে মনিকা সিংহ এবার মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রপতির কাছে পরিবার সমেত স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন।

     

    মা মনিকা সিংহের বক্তব্য, যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে, তাতে অভাবের তাড়নায় এমনি মরে যাবেন। কারণ মেয়ের রোজগার নাই।  পরিবারে আর কেউ রোজগার করে না।স্বামী অসুস্থ।  এই পরিস্থিতিতে তাদের মৃত্যু ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

     

    এই পরিস্থিতির কথা জানতে পেরেই শনিবার সকালে বিশিষ্ট সমাজসেবী কাজল গোস্বামী ওই পরিবারটির পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। কাজল গোস্বামী বলেন, ওই পরিবারকে আশ্বাস দিয়েছি এবং অনুরোধ করেছি যাতে উনারা কোনপ্রকার অসহায় অনুভব না করেন। অতি শীঘ্রই ওই পরিবারটির জন্য  একটি ধারাবাহিক মাসিক আয়ের ব্যাবস্থা করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।