মাছের ভেড়ি তৈরির কাজ সিঙ্গুরে

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর ছোট গাড়ি তৈরির কারখানা ঘিরে একটা সময় উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। আর রাজ্যের ক্ষমতা পরিবর্তনের অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন। আদালতের রায়ে জমি ফিরে পেয়েছেন কৃষকরা।

    সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা হয়নি। কিন্তু ততদিন চাষের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে জমি।সিঙ্গুরের সেই জমিতে, এবার তৈরি হচ্ছে মাছের ভেড়ি। যন্ত্রের সাহায্যে শুরু হয়েছে মাটি কাটার কাজ।

    ২০১১ সালে বাম সরকারের পতন।  এবং তৃণমূল সরকারের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের জেরে সিঙ্গুর থেকে টাটাদের সরতে হয়েছিল।ক্ষমতায় এসেই সিঙ্গুরের জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, রাজ্য সরকার কৃষকদের জমি ফেরত দিয়েছে।

    সিঙ্গুরের জমি চাষযোগ্য করার কাজও করা হয়েছে। কিন্তু, এত বছর কেটে গেলেও, সেই কাজ শেষ হয়নি। এই অবস্থায়, সিঙ্গুরের জমিতে মাছের ভেড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।

    সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতি কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল নেতা দুধকুমার ধারা বলেছেন, প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ বিঘা বা তার বেশি যাঁদের জমি আছে, তাঁদের সরকারের তরফে পুকুর করে দেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্যে যেমন পুকুর খনন হচ্ছে, তেমনি তিন বছর বিনামূল্যে মাছও দেওয়া হবে।

    সিঙ্গুরের গোপালনগর মৌজায় ১০ বিঘা জমিতে মাছের ভেড়ি তৈরি হচ্ছে।পাশের আরও কয়েকটি জমিতেও ভেড়ি তৈরি হবে বলে দাবি মালিকদের।

    সিঙ্গুরের এক কৃষক বলেছেন,   একটা স্বপ্ন ছিল কারখানা হবে, সেটা তো হল না। তাই একটা চিন্তাভাবনা করেছি, একটা রোজগারের। সরকারকে বলেছিলাম, সেই মতো মাছের ভেড়ি হচ্ছে।

    আর এক কৃষক বলেছেন,  জমি চাষের উপযুক্ত করতে পারছিলাম না, তাই ভেড়ি করার সিদ্ধান্ত। আশপাশের আরও কয়েকজনও মাছের ভেড়ি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

    আর এই ঘটনা ঘিরে উঠেছে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, মাটি কাটার ব্যবসা করার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। জমি চাষের ব্যবস্থা করতে পারল না সরকার। শিল্প বন্ধ করে, চাষ বন্ধ করে মাটি কাটার ব্যবসার ব্যবস্থা করছে সরকার।

    বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ইতিমধ্যেই বহু জায়গায় জমি লুঠ করে ভেড়ি হয়েছে। যেখানে তিন-ফসলি জমি ছিল, সেখানে ভেড়ি হবে! দিদিমনি সরষে ছড়িয়েছিলেন, আমরা দেখেছি।সরষের মধ্যেই যে ভূত রয়েছে, এখন প্রমাণ হল।

    পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।  শ্রমমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না বলেছেন,  মিথ্যে অভিযোগ করে বাজার গরম করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা।

    সব মিলিয়ে, সিঙ্গুরে মাছের ভেড়ি তৈরি নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।