|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক:- ভুয়ো’ নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরিতে যোগ দিতে আসা ‘শিক্ষকদের’ এক সময় ‘হিড়িক’ পড়েছিল বাঁকুড়া জেলায়। ২০১৭-য় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরে, এমন বহু ঘটনা জেলার বিভিন্ন অবর স্কুল পরিদর্শকের অফিসে নজরে এসেছিল বলে দাবি। অথচ, সে সব ঘটনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে যথাযথ তদন্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ।রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমানে শিল্পমন্ত্রী) পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে বাঁকুড়া জেলায় ১১ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। ২০১৭-র প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্যানেলে নাম থাকা তেরো জনের কাছে যোগ্যনথি না থাকা সত্ত্বেও ‘রাজ্যের নির্দেশে’ তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ করাতে হয় বলে দাবি করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের আধিকারিকদের একাংশ। এর পাশাপাশি, ‘ভুয়ো’ নিয়োগপত্র নিয়ে স্কুলে যোগ দিতে আসা ‘শিক্ষকদের’ সংখ্যাও কম ছিল না, দাবি ওই আধিকারিকদের।জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, “স্কুলে যোগ দেওয়ার নিয়োগপত্র নিয়ে অবর স্কুল পরিদর্শকের অফিসে এসে হাজির হতেন চাকরিপ্রার্থীরা। অথচ দফতরের কর্মীরা সে নিয়োগপত্রের স্বপক্ষে কোনও তথ্য খুঁজে পেতেন না। এমনকি, নিয়োগপত্রগুলিতে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান বা কখনও কখনও রাজ্যের কোনও পদাধিকারীর জাল সইও থাকত। জেলার বহু সার্কলেই এমন ঘটতে দেখা গিয়েছে।” দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছিলেন, গঙ্গাজলঘাটি ও ওন্দা সার্কলে এমন দু’টি ঘটনা ঘটেছিল। তাঁর দাবি, “নিয়োগপত্র নিয়ে স্কুলে যোগ দিতে এসেছিলেন কয়েক জন। অথচ, তাঁদের নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ দফতরের কাছে ছিল না। খুঁটিয়ে দেখার পরে জানা যায়, নিয়োগপত্রগুলি জাল।”‘নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক বিমান পাত্রের কথায়, “বছর দু’য়েক আগে বাঁকুড়া সদর (পশ্চিম) চক্রে এমনই জাল নিয়োগপত্র নিয়ে এক ব্যক্তি হাজির হয়েছিলেন। দফতরের কর্মীরা নিয়োগপত্রটি যে জাল, তা ধরে ফেলেন। ঘটনাটি ফাঁস হতে ওই ব্যক্তি দফতর থেকে চম্পট দেন।”তবে সে সময়ে জেলায় আকছার এমন ঘটনা ঘটলেও দফতর কেন আইনানুগ পদক্ষেপ করেনি, প্রশ্ন উঠছে। মন্তব্য করতে চাননি জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) জগবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায়। দফতরের এক কর্তার দাবি, “ওন্দা ও গঙ্গাজলঘাটির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অবর স্কুল পরিদর্শককে থানায় অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছিল। তবে, শেষমেষ অভিযোগ জানানো হয়েছিল কি না, তা জানা নেই।”বিমানবাবুর অভিযোগ, “চাকরির ফাঁদ পেতে মানুষকে প্রতারিত করার চক্রের রমরমা জেলায় যে ছিল, এই ঘটনাগুলি তার প্রমাণ। কেন এর তদন্ত হল না, সেটাই বড় প্রশ্ন। জেলার কোনও প্রভাবশালী নেতা এর পিছনে থাকতেই পারে, সন্দেহ আমাদের।” রাজ্য তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি গৌতম গঁরাইয়ের দাবি, “এ সব শিক্ষা দফতরের বিষয়। আমার কিছু জানা নেই।”