গোহগ্রাম পঞ্চায়েত গড়তে তৃণমুলের এখন নির্দলই ভরসা

আজিজুর রহমান,গলসি : গলসি ২ নং ব্লকের গোহগ্রাম পঞ্চায়েত গড়তে তৃণমুলের এখন নির্দলই ভরসা। কার্যত এখানে তৃণমূলের একপ্রকার ভরাডুবি হয়েছে। জানতে পারা গিয়েছে, গোহগ্রাম পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা মোট ১৬ টি। যেখানে তৃণমূল ৭ টি, নির্দল ৫ টি, বিজেপি ৩ টি ও সিপিআইএম ১ আসন পেয়েছে। তৃণমুলের প্রাক্তন উপপ্রধান বিমল ভক্ত এই পঞ্চায়েতে ৭ নির্দল টিকিটে প্রার্থী দিয়েছিলেন। তাতে ৫ টিতে জয়লাভ করেছেন। তাই গোহগ্রাম পঞ্চায়েত গড়তে এখন নির্দল প্রার্থীরাই ভরসা বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি নিয়ে গলসি ২ নং ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুজন মন্ডল বলেন, ‘গলসি ২ নং ব্লকে ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮ টি তে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছি। পঞ্চায়েত সমিতির ২৭ টি আসনের মধ্যে ২৫ টিতে আমরা জিতেছি। জেলা পরিষদের ৩ টি আসনেও জিতেছি। গোহগ্রাম পঞ্চায়েতও আমাদের হাতেই থাকবে বলে আশাবাদি। এই নিয়ে আলোচনা হচ্ছে আমাদের।’ স্থানীয় বাসিন্দা অনন্ত বালোক, ধীরানন্দ রায়রা জানান, বিমল ভক্ত বরাবারই এলাকার জনপ্রিয় মুখ। তিনি ছিলেন, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মৃত বাসুদেব চৌধুরী ঘনিষ্ঠ। কয়েকমাস আগে বাসুদেব বাবু মারা গেছেন। তবে তার আগে অবশ্য ব্লক সভাপতি পরিবর্তন হয়। নতুন ব্লক সভাপতি হন সুজন মন্ডল। তিনি আসার পরই ওই এলাকার দায়িত্ব চলে যায় উত্তম মন্ডলের হাতে। তখন থেকেই কোনঠাসা হয়ে যান বিমল ভক্ত এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিমল ভক্ত জানান, এবারে পঞ্চায়েত ভোটে দল তাকে বা তার লোকদের টিকিট দেয়নি। তাই তিনি নিজে গোহগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়কৃঞ্চপুর গ্রাম সংসদের ৯৮ নম্বর আসনে নির্দলে দাড়িয়ে ছিলেন। তার প্রতীক ছিল নারকেল গাছ। সেখানে তার বিরুদ্ধে সিপিআইএম, বিজেপি ও তৃণমূল প্রার্থী দিলেছিল। এমনকি বিমলকে হারাতে উত্তম মন্ডল নিজে নির্দলের প্রার্থী হন। তিনি আম চিহ্নে দাঁড়ান। তবে তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। সবাইকে হারতে হয়েছে তার কাছে। বিমল ভক্ত আরও বলেন, উত্তরবঙ্গের সভা থেকে দিদি বলেছিলেন, চোরেদের টিকিট দেওয়া হবে না। তবে এখানে ডাকাতদের ও বালির কারবারীদের টিকিট দেওয়া হয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে সাতজন নির্দল প্রার্থী দিয়েছিলাম। তারমধ্যে পাঁচ জনকে জয়লাভ করাতে সক্ষম হয়েছি। তাছাড়া ঠিকমতো প্রচার ও সহযোগিতা পেলে ওই দুটি আসনে জয়লাভ করতে পারতাম। তার দাবী, চার জনের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজে জেতা। আবার অন্য নির্দল প্রার্থীদের জেতানোর লড়াইটা প্রচন্ড কষ্টকর ছিল। ভোটারদের সিম্বল চেনাতে খুব অসুবিধা হয়েছে। তবুও মানুষ যে আমার সাথে আছে তা আমি প্রমান করেছি। তাছাড়া নেতৃত্বের ভয়ে আরও দুটি আসনে আমার কর্মীরা নির্দলে দাঁড়াতে সাহস পায়নি। নির্দলদের দলে না নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্ত ঠিক হলেও ব্লকের ও নেতাদের প্রার্থী বাছাইয়ে একটু তো ভুল হয়েছে। ভোটের ফলের পর এটা তো আর অস্মিকার করার জায়গা নেই। এখান থেকে প্রমানিত এখানে যারা তৃণমুল প্রার্থী ছিলো তাদের ভোট দিতনা মানুষ। তাই বিরোধিরা জিতে যেত। তার দাবী, দল নিলে দলে ফিরব। না হলে নির্দলই থাকব। এদিকে তৃণমূল পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করতে চাইলে তাদের দুইজন নির্দল বা বিরোধী প্রার্থীকে নিতেই হবে। কারন পঞ্চায়েতের ১৬ টি আসনের মধ্যে তাদের প্রাপ্ত আসন ৭ টি। তাই গোহগ্রাম পঞ্চায়েত নির্দল প্রার্থীরা এখন তৃণমূলের ভরসা বলে মনে করছেন স্থানীয় মানুষজনের এক অংশ।