|
---|
পশ্চিম মেদিনীপুর: মাস্টার ডিগ্রি নিয়েও মেদিনীপুর হেড পোস্ট অফিসের বাইরে রাস্তায় বসে আঁধার কার্ডের ফর্ম পুরন করে সংসার চালান খাপ্রেল বাজারের গৃহবধূ সুদেষ্ণা দাস।
জানা যায় ১০ বছর আগে মেদিনীপুর খাপ্রেল বাজারের মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অভিজিৎ দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় সুদেষ্ণার। তার একটি ৯ বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামী অভিজিৎ তিন বছর আগে পথ দুর্ঘটনায় মারা যায়। তারপর এই সংসার চালানোর দায়িত্ব পড়ে সুদেষ্ণার উপর। এছাড়াও শ্বশুরবাড়িতে রয়েছে অবহেলা। হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও পাওয়া যায়নি কোনো চাকরি।
সেই সময় সে লক্ষ্য করে, বহু অশিক্ষিত গরীব মানুষ হাতে আঁধার কার্ডের ফর্ম নিয়ে একে তাকে অনুরোধ করছেন ফর্ম পূরণ করে দেওয়ার জন্য। কেউ করে দিচ্ছে না, কেউ হয়তো বা ফর্ম পূরণ করে দিচ্ছে সেই সমস্ত মানুষদের। এরপরই সে ভাবে যদি এই ধরনের গরীব মানুষদের কিছু সাহায্য করে দেওয়া যায়, তাহলে হয়তো অনেকেই তার পারিশ্রমিক দিতে পারে।
তারপরেই সুদেষ্ণা অবলম্বন করে এই পথ। তিন বছর ধরে প্রধান ডাকঘরের সামনে মাটিতে পলিথিন পেতে বসে সবার ফর্ম ফিল-আপ করে আসছে সুদেষ্ণা। আর তাতে যা টাকা পাচ্ছে, তাই দিয়ে চলছে তার সংসার।
এক সাক্ষাৎকারে সুদেষ্ণা জানালো “পড়াশোনা করে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেছি বহুবার। বহু সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি ফর্ম ফিল-আপ করে দৌড়ে গিয়েছি চাকরির জন্য। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চাকরি কিছুতেই হয়নি। স্বামী যখন ছিলেন তখন সমস্যা হয়নি ৷ কিন্তু স্বামী মারা যাওয়ার পর ওই ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। তাই এই কাজই শুরু করলাম। কোনও কাজই ছোট নয়। তবে সরকারের কাছে আবেদন করব, শুধু কোটিপতি ও ধনীদের না দেখে বরং শিক্ষিত বেকারদের দিকে একটু নজর দিন।”