কাব্যগ্রন্থের পর্যালোচনা

সেখ সামসুদ্দিন  ১১ জুনঃ সম্প্রতি এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সেখ মহঃ ইউনুস সাহেবের লেখা দুইটি কাব্যগ্রন্থ ‘জীবন নিরোদ’ ও ‘সময়ের পালাবদল’ হাতে পেলাম। কবিতাগুলি পাঠ করে অনবদ্য লেখনীর স্বাদ পেলাম। কবি হিসেবে তার কলমে বাস্তব জীবন থেকে ধর্ম, ভালোবাসা থেকে দুঃখ কিছু বাদ যায়নি। এক কথায় বলা যায় অসাধারণ গ্রাম বাংলার এই ধরনের বহু প্রতিভা আড়ালে থেকে যায়, পায় না কোন প্রচারের আলো। কবির লেখনীর মধ্যে শব্দচয়ন থেকে শুরু করে বিষয় সবই খুব ভালো হয়েছে বলা যায়। একটা জায়গায় কবির কার্পণ্য বার বার হোঁচট খাওয়াই, তা হলো কমা, পূর্ণচ্ছেদ বা কোলন ইত‍্যাদির ব্যবহারে। একটি কবিতার প্রথম থেকে শুরু করে শেষ লাইনে গিয়ে পূর্ণচ্ছেদ ব্যবহার অথচ মাঝে অনেকগুলো জায়গাতেই কমা, কোলন, পূর্ণচ্ছেদের ব্যবহার করা যেতে পারত। কবি কেন করেননি সেটা আমার বোধগম্যের বাইরে। অক্ষর বিন‍্যাসকারীরও উচিৎ ছিল কবির দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তবু পাঠক হিসেবে মনে হয়েছে এগুলির ব্যবহার হলে কবিতাগুলির আরো মাধুর্য বাড়তো। তা সত্ত্বেও স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছি অনবদ্য লেখা কবিতা পাঠ করলাম। কবির সম্পর্কে দু এক লাইন না বললেই নয়। কবি সেখ মোহাম্মদ ইউনুস-এর জন্মস্থান বর্ধমান জেলার রায়না থানার গোলগ্রামে ১৩৫৬ সালে জন্ম। পারিবারিক কারণে পরবর্তীতে জামালপুর ব্লকের মিরাপাড়ায় বসবাস করেন। ১৯৯৫ সালের জোৎসাদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শিক্ষকতা শুরু করেন। তারপর মিরাপাড়া নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক জীবনের সমাপ্তি ঘটে। তিনি এই কর্মজীবনের পাশাপাশি কবিতা লেখা ছিল নেশা। তার লেখা কবিতা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন সময় প্রকাশ পেয়েছে। সম্প্রতি যে কাব্যগ্রন্থ দুইটি হাতে পেয়েছি তা নতুন গতি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত। ‘জীবন নিরোদ’ গ্রন্থটি ইহলোক ছেড়ে যাওয়া সহধর্মীনীর প্রতি এবং ‘সময়ের পালাবদল’ গ্রন্থটি পরলোকগত পিতাকে উৎসর্গ করেন। এই ধরনের কাব্যগ্রন্থ লাইব্রেরীতে থাকার প্রয়োজন আছে।