দিল্লি ঝড়ে উড়ে গেল কলকাতা! কুলদীপ ম্যাজিকে বড়ো জয় দিল্লির

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: প্যাট কামিন্স ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। আজ রবিবার দিল্লি ঝড় উড়িয়ে নিয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সকে। পুরনো দলের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠলেন কুলদীপ যাদব।কয়েক বছর আগেও কুলদীপকে ভারতবর্ষের সেরা স্পিন সম্ভাবনা ধরা হত। কুলদীপের বল পড়ে কোন দিকে ঘুরবে, বুঝতেই পারত না ব্যাটাররা! ভারতীয় টিমে তাঁর সঙ্গে যুজবেন্দ্র চাহালের জুটি নিয়ে চর্চাও চলত প্রচুর। কিন্তু সেই কুলদীপ ধীরে ধীরে ভারতীয় ক্রিকেটের সৌরজগৎ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যান। রবি শাস্ত্রী যাঁকে অতীব সম্ভাবনাময় ধরেছিলেন, সেই একই স্পিনার সব রকম ফরম্যাট থেকে বাদ পড়ে যান। টেস্ট। ওয়ান ডে। টি-টোয়েন্টি।

    আইপিএলেও তো। দিনের পর দিন কুলদীপকে ‘ব্রাত্য’ করে বসিয়ে রাখত কেকেআর। খেলাত না। ছেড়েও দিত না। অপরাধ? অপরাধ– মইন আলির কাছে একবার ইডেনে বেধড়ক মার খাওয়া। সেই কুলদীপ এদিন পুরনো দলের বিরুদ্ধে নিলেন চার-চারটি উইকেট। এবারের মেগা টুর্নামেন্টে কুলদীপ ধরা দিচ্ছেন অন্য অবতারে। উমেশ যাদবের ক্যাচটা ধরার পরে তাঁর উদযাপন দেখে সবাই বলবেন কেকেআর-কে শিক্ষা দেওয়ার জন্যই হয়তো নেমেছিলেন মাঠে। আগের ম্যাচের নায়ক কামিন্সকেও বিপজ্জনক হওয়ার আগে ফিরিয়ে দেন দিল্লির চায়নাম্যান বোলার।

    রবিবার টস জিতে দিল্লি ক্যাপিটালসকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তা নেন পৃথ্বী শ এবং ডেভিড ওয়ার্নার। দুই ব্যাটসম্যান ওপেনিং জুটিতে ৯৩ রান জোড়েন। বরুণ চক্রবর্তীর বলে বোল্ড হন পৃথ্বী (৫১)। দিল্লি অধিনায়ক পন্থ চটজলদি ২৭ রান করেন। অন্যদিকে ওয়ার্নারও ভয়ংকর হয়ে উঠতে থাকেন। দিল্লি যে বড় রান তুলতে চলেছে, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দলের রান যখন ১৪৮, তখন ডাগ আউটে ফেরেন পন্থ (২৭)। সুনীল নারিন ফেরান ললিত যাদবকে (১)। নারিনকে গ্যালারিতে ফেলতে গিয়ে রোভম্যান পাওয়েল (৮) ধরা পড়েন রিঙ্কু সিংয়ের হাতে। ওয়ার্নার অন্য দিকে লড়াই চালিয়ে যান। ৪৫ বলে ৬১ রান করে আউট হন অজি বাঁ হাতি ওপেনার ওয়ার্নার। দিল্লির রান তখন ৫ উইকেটে ১৬৬ রান। এই জায়গা থেকে অক্ষর প্যাটেল এবং শার্দুল ঠাকুর দিল্লিকে পৌঁছে দেন পাহাড়প্রমাণ ২১৫ রানে। এই দুই ব্যাটসম্যান কেকেআর বোলারদের মাঠের যত্রতত্র ফেলেন।

    দিল্লির এই বিশাল রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় কেকেআর। বিপজ্জনক ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে (১৮) ডাগ আউটে ফেরান খলিল আহমেদ। অজিঙ্ক রাহানেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি করেন মাত্র ৮ রান। ৩৮ রানে দ্রুত ২ উইকেট হারায় কেকেআর। এরপরে ইনিংস গোছানোর কাজ করেন শ্রেয়স আইয়ার ও নীতীশ রানা। দু’ জনে ৬৯ রান জোড়েন জুটিতে। নীতীশ রান ব্যক্তিগত ৩০ রানে আউট হন। কিছুক্ষণ বাদে ফেরেন শ্রেয়স আইয়ার (৫৪)।

    স্যাম বিলিংস (১৫) আউট হলে আরও খারাপ অবস্থা হয় কেকেআরের। স্কোর বোর্ড বলছে ৫ উইকেটে ১৩৩ রান নাইটদের। অতি বড় নাইট সমর্থকরা ভেবেছিলেন রাসেল ও কামিন্স বদলে দিতে পারবেন ছবিটা। কিন্তু ক্রিকেট ঈশ্বর অন্যরকম চিত্রনাট্য লিখে রেখেছিলেন। কুলদীপের ঘূর্ণিতে ঠকে যান প্যাট কামিন্স (৪)। নারিন (৪), উমেশ যাদব (০) ব্যর্থ। দেখা গেল না আন্দ্রে রাসেল (২৪) ম্যাজিকও। ক্যারিবিয়ান দৈত্য যখন ফেরেন, তখন ম্যাচ ঢুকে গিয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস শিবিরে। পুরো ২০ ওভার খেলতে পারেননি নাইটরা। ১৯.৪ ওভারে ১৭১ রানে শেষ হয়ে যায় কেকেআর।