প্রয়াত হুগলির  প্রাক্তন সাংসদ রূপচাঁদ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রয়াত হুগলির  প্রাক্তন সাংসদ রূপচাঁদ পাল । মঙ্গলবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। বার্ধক্যজনিত অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন তিনি। মঙ্গলবার বিদায় নিলেন ইহলোক থেকে। দীর্ঘ রাজনৈতিক কর্মজীবনে হুগলির অন্যতম জনপ্রিয় এবং দাপুটে নেতা ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত ছ’মাস ধরে বার্ধক্য়জনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন রূপচাঁদবাবু। শুরুতে বাড়িতে রেখেই চলছিল চিকিৎসা। কিন্তু সোমবার রাতে পরিস্থিতির অবনতি হয়। আচমকা অসুস্থতা বাড়ে তাঁর। স্নায়ু রোগে আক্রান্ত হন তিনি। সোমবার রাতে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৯৫৮ সালে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করেন রূপচাঁদবাবু। পরে সিপিআইএম-এর জেলা কমিটির সদস্য হন। এর পাশাপাশি জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্যও ছিলেন তিনি। সিটু সংগঠনের জেলা-সহ সভাপতির দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজে যুক্ত ছিলেন।রাজনীতিতে আসার আগে অধ্যাপনা করতেন রূপচাঁদবাবু। প্রথমে মগরা বাগাটি শ্রী গোপাল ব্যানার্জি কলেজ এবং পরে নৈহাটির ঋষি বঙ্কিম কলেজে বাংলায় অধ্যাপনা করেছেন। পরবর্তী সময়ে অধ্যাপনা ছেড়ে দলের সর্বক্ষণের কর্মী হন। সপ্তম লোকসভা নির্বাচনে, ১৯৮০ সালে হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রথম বার সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালে জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দুমতি ভট্টাচার্যের কাছে পরাজিত হন।

     

    পরবর্তী সময়ে, ১৯৮৯ থেকে ২০০৪ সালে টানা ছ’বার এবং মোট সাত বার সাংসদ নির্বাচিত হন রূপচাঁদবাবু। ২০০৯ সালে তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগের কাছে পরাজিত হন তিনি। তার পর থেকে আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তবে আজীবন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে কাজ করে গিয়েছেন। চুঁচুড়া বড়াল গলিতে রূপচাঁদবাবুর বাড়ি। সাংসদ থাকাকালীন হুগলির সিপিআইএম-এর আর এক দাপুটে নেতা তথা আরামবাগ সাংসদ অনিল বসুর সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব নিয়ে এক সময় চর্চা তুঙ্গে ছিল রাজনৈতিক মহলে। দলবিরোধী কাজের জন্য অনিল বসুকে বহিষ্কৃত হন। ২০১৮ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাতেই অনিলবাবু এবং রূপচাঁদবাবুর দ্বন্দ্বের পরিসমাপ্তি ঘটে।