মহদীপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্ত দিয়ে চলছে ওভারলোডিং পণ্যবাহি লরি পারাপার

    মালদা, ১৯ জুলাই:   মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প “সেভ ড্রাইভ সেফ লাইফ” কে উপেক্ষা করে মালদার মহদীপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্ত দিয়ে চলছে ওভারলোডিং পণ্যবাহি লরি পারাপার। অথচ এই ওভারলোডিং করার ব্যাপারে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন মহদীপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী লরি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।  ৯ জুলাই থেকে ওভারলোডিং পণ্যবাহী লরি বাংলাদেশ রপ্তানি করার ক্ষেত্রে বন্ধ ছিল।  কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে হঠাৎ করে ওভারলোডিং পণ্যবাহী লরি চলাচল শুরু করেছে বলে অভিযোগ।

    প্রতিদিন এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্ত দিয়ে ১৫০ থেকে ২০০টি পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করে।  ইতিমধ্যে ওই সীমান্তে প্রায় ৪ হাজার পণ্যবাহী লরি দাঁড়িয়ে রয়েছে।

    যদিও এ ব্যাপারে মালদা মহদিপুর ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এসোসিয়েশনের সম্পাদক ভূপতি মন্ডল জানিয়েছেন,  আরটিও রুলস ভঙ্গ করে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া আর কোনও উপায় নেই। সরকারি নিয়ম মেনে পণ্যবাহী লরি যদি বাংলাদেশের রপ্তানি করা হয়,  তাহলে লাভের কোন অংশে থাকবে না।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ছয় থেকে দশ চাকার লরিতে কুড়ি টনের বেশি কোন পণ্য সামগ্রী লোডিং করা যাবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এর থেকে অনেক বেশি পণ্য সামগ্রী ওভারলোডিং করে বাংলাদেশে যাতায়াত করছে। যার মধ্যে রয়েছে আলু,  পেঁয়াজ, বিভিন্ন ধরনের ফল, খাদ্য সামগ্রী, পাথর প্রমূখ।  ১২ থেকে ১৪ চাকার লরি হলে সেখানে  অতিরিক্ত চার থেকে পাঁচ টন আরো পণ্য সামগ্রী বাড়ানো যায়। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই বিভিন্ন পণ্যবাহী লরিগুলিতে ৩০ থেকে ৩৫ টন পণ্যসামগ্রী বেআইনিভাবে ওভারলোডিং করে মালদার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্ত দিয়ে পারাপার হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

    এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি জেলা পুলিশ ও প্রশাসন ওভারলোডিং-এর জন্য ওই বাণিজ্য সীমান্ত এলাকায় পণ্যবাহী লরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল।  প্রায় চার হাজার পণ্যবাহী লরি গত ৯ জুলাই থেকে সীমান্ত এলাকায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।  কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই ওভারলোডিং পণ্যবাহী লরি চলাচল করতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    মালদা মহদীপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সামিরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, পুলিশের নির্দেশেই বন্ধ ছিল।  আবার পুলিশের নির্দেশেই বাংলাদেশের পণ্যবাহী লরি পাঠানো শুরু হয়েছে।

    ওই সংগঠনের আরেক সদস্য মজিদ মিঞা জানিয়েছেন,  আরটিও রুলস ভঙ্গ হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু যে পণ্যবাহী লরিগুলি আগে থেকে ওভারলোডিং করে সীমান্তে দাঁড়িয়ে ছিল সেগুলি আপাতত বাংলাদেশ যাওয়ার জন্য ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তাই আপাতত এদিন থেকেই কিছু কিছু করে পণ্যবাহী লরি বাংলাদেশ রপ্তানির কাজ শুরু করেছে।

    এব্যাপারে মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু বলেন,  বেআইনি কাজকে সংগঠন কোন ভাবে সমর্থন করে না। তবে সাময়িক কিছু সমস্যার কারণে কিছু গাড়ি বর্ডারে আটকে ছিল, পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এই সমস্যা যাতে মিটানো যায় সে ব্যাপারে জানানো হয়েছে। আইন মেনে ব্যবসা হোক, আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আছি।

    এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।

    ছবি ——- মালদা মহদীপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্তে ওভারলোডিং পণ্যবাহীলরি।