বাঙালির রেডিও প্রেম, মহালয়ার সকাল মানেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র

 

    নিজস্ব প্রতিবেদক- মহালয়ার ভোরে আমবাঙালির ঘুম ভাঙে শাঁখের ধ্বনি, তবলা, আর বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চন্ডীপাঠে। আধো ঘুমে রেডিওতে কান পাতা বাঙালির এক শাশ্বত অধ্যায় ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। যে অনুষ্ঠান শুনে বাঙালির মনে আজও বেজে ওঠে আগমনীর সুর। বীরেন্দ্রকৃষ্ণের স্তোত্রপাঠের গাম্ভীর্যে মুখরিত হয়ে ওঠেন তাঁরা। হাজারো লড়াই ছাপিয়ে এখানে বাঙালির কোনো বিভেদ নেই। এমনই এই বেতার অনুষ্ঠানের মাহাত্ম্য, যে আপামর বাঙালি চিরকালই রেডিওর ভোরের এই অনুষ্ঠানকে ‘মহালয়া’ বলে উল্লেখ করে থাকেন, যখন আমরা সকলেই জানি যে মহালয়া হলো তিথি। পিতৃপক্ষের শেষ, দেবীপক্ষের শুরু। আর এই দেবীপক্ষের আগমনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকেন যিনি, তিনি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। 28 সেপ্টেম্বর শনিবার টিভিতে মহালয়া অনুষ্ঠিত হবে।প্রথম দিকে রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা ছিল না, তখন লাইভ অনুষ্ঠান হত। শুরুটা ১৯৩২-এর ষষ্ঠীর ভোরে।
    সত্যিই কথা বলতে গেলে, স্টুডিওয় এখন আর সেই উন্মাদনা নেই। এখন ট্রাফিক সিগন্যালেই শোনা যায়, বাজল তোমার আলোর বেণু…। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানেও একই গান শুনতে পাচ্ছি। এমনকী অন্নপ্রাশনে চলছে জাগো দুর্গা, জাগো দশপ্রহরণধারিণী। ফলে, সেই পাগলের মতো আকর্ষণটা আর নেই। আবার বলব আছেও। এখনও বক্স কিংবা মাইকের মাধ্যমে সারা পাড়া জাগিয়ে মহালয়া শোনানো হয়। তবে, ওই যে রেডিও-র ভিতরে কী যে লুকিয়ে রয়েছে, তার রহস্য সব সময় থেকে গিয়েছে। তখন মনে হত, ওই অনুষ্ঠান মিস করলে, জীবনটাই যেন ব্যর্থ হয়ে গেল। সে সময় দেখা যেত মা-ঠাকুমারা স্নান করে, নতুন কাপড় পরে চণ্ডীপাঠ শুনতে বসতেন। সেই ভক্তির আবহটা সময়ের বিবর্তনে স্বাভাবিকভাবেই আর আশা করতে পারি না।