|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক:- বিমা ও ফিটনেসের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া বহু সরকারী বাসে নির্দ্বিধায় চলছে যাত্রী পরিবহন। এমন অভিযোগ হামেশাই উঠে থাকে। তবে সেই অভিযোগ যে অমূলক নয় তার প্রমান মিলল সোমবার পূর্ব বর্ধমানের মেমারীতে সরকারি যাত্রীবাহী বাস দূর্ঘটনার কবলে পড়ার পরই। দূর্ঘটনার তদন্তে নেমে মেমারী থানার পুলিশ দক্ষিনবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার (SBSTC) ওই বাসটি বাজেয়াপ্ত করেছে। পাশাপাশি চালকে গ্রেফতার করেছে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর জন্য। তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে মঙ্গলবার ধৃত বাস চালককে পুলিশ পেশ করে বর্ধমান আদালতে। বিচারক চালকের জামিন মঞ্জুর করে। এদিকে সরকারি বাসের এই দুরাবস্থার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি রাজ্যের পরিবহন দফতরকেই কাঠগড়ায় তুলেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, SBSTC ওই যাত্রীবাহী বাসটি সোমবার সকালে কলকাতার করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ে। বাসটির নম্বর প্লেটে পরিবহন দফতরের রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী যে নম্বর লেখা ছিল তা হল WB-39B-4590। বাসটি আসানসোল যাচ্ছিল। অভিযোগ, দ্রুত গতিতে দু নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসানসোল অভিমুখে যাওয়ার সময়ে মেমারীর কানাইডাঙা এলাকায় বাসটি প্রথম পাল্টি খায়। পরে সেখানকার ক্যানেলের ব্রিজ টপকে ঝুলতে থাকে বাসটি। বরাত জোরে এই দুর্ঘটনায় বাসে থাকা জনা ৪০ যাত্রীর কারুর প্রাণহাণির ঘটনা না ঘটলেও সাত জন যাত্রী সামান্য আহত হন। ক্রেনের সাহায্যে ঝুলন্ত বাসটি উদ্ধার করার পর মেমারী থানার পুলিশ বাসটি বাজেয়াপ্ত করে। পাশাপাশি বাসের চালককেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ দূর্ঘটনারকারণ নিয়ে তদন্তে নামে।এদিকে পুলিশ যখন দূর্ঘটনার তদন্তে ব্যস্ত সেই সময়ে মেমারীর বাসিন্দাদের একাংশ বাসটির হাল হকিকত জানতে সরকারি\”এম পরিবহন অ্যাপস\” খুলে বাসটির নম্বর দিয়ে সার্চ করা শুরু করেন। তখনই প্রকাশ্যে আসে দূর্ঘটনাগ্রস্ত দক্ষিণববঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার বাসটির বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। আবার ফিটনেশের মেয়াদ প্রায় আড়াই বছর আগে শেষ হয়ে গিয়েছে। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় স্থানীয়দের মধ্যে এবং যারা সরকারী বাসের যাতায়ত করেন তাদের মধ্যেও। বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশের কর্তারা কেউ কোন মন্তব্য করতে না চাননি। যদিও দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডলের বক্তব্য, সরকারি বাসের ইনসিওরেন্স ফেল হওয়ার কোন কারণ নেই। ফিটনেস সার্টিফিকেটও করিয়ে নেওয়া হয়ে থাকে। সেই কারণেই কোন সরকারি বাস দূর্ঘটনার কবলে পড়লে আদালতের নির্দেশ মত দুর্ঘটনাগ্রস্ত যাত্রীরা বিমা পেয়ে যান। কোন অসুবিধা হয় না। তাঁর দাবি, হয়তো সরকারি অ্যাপে বাসটির বিমা ও ফিটনেস সংক্রান্ত তথ্য আপলোড হয়নি।