|
---|
আজিজুর রহমান, পূর্ব বর্ধমান, গলসি : গলসির পুরসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ ইনজেকশন ও স্যালাইনের আকাল। যার জেরে শিকেয় উঠেছে হাসপাতালের চিকিৎসার পরিসেবা। যেখানে গ্রামগঞ্জের গরীর দিনআনি দিনখায় মানুষরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবার কথা সেখানে চিকিৎসা করাতে এসে সর্বশান্ত হচ্ছেন গরীব মানুষরা। আর এইভাবে মাস পেরিয়ে গেলেও ভুরুক্ষেপ নেই কারও। নিত্য ওষুধের গাড়ি গেলেও জেলা থেকে মিলছে না পর্যাপ্ত ওষুধ ইনজেকশন ও স্যালাইন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক যে হাসপাতালে অধিকাংশ ডাক্তার চিকিৎসা পরিসেবা দিতে করতে ভয় পাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আসগর আলি মল্লিক বলেন, ডাক্তাররা বলেই দিচ্ছেন, বাইরে ওষুধ কিনে আনতে হবে। হাসপাতালে ওষুধ ও স্যালাইন সাপ্লাই নেই। বিনামূল্যে পাওয়া ওষুধ সব এখন কিনতে হচ্ছে তাদের। এমনকি জ্বর ও ডাইরিয়া চিকিৎসাতে সাধারণ সেলাইনও মিলছে না হাসপাতালে। তার দাবী, তাহলে সরকার বন্ধ করে দিক হাসপাতাল। রোগী আত্মীয় সুভাষ আঁকুড়ে বলেন, দুইদিন হল মেয়েকে নিয়ে এসেছি। কোন ওষুধ স্যালাইন দেয় নাই। আমার টাকা নেই বলেই হাসপাতালে এসেছি। কিন্তু এখানে ডাক্তার বাবুরা বাইরের ওষুধ কিনতে বলছেন। কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। হাদিয়া বিবি সেখ বলেন, আত্মীয়কে ভর্তি করেছি আটশো টাকা খরচ হয়ে গেল। হাসপাতাল শুধু একটা স্যালাইন দিয়ে দায় সেরেছে। কাল একদফা আজ এক দফা ওষুধ কিনতে হল। সেখ ইনামুল নামে আর এক রোগী আত্মীয় বলেন, হাসপাতালে রোগী ভর্তি হলেই ডাক্তার বাবুরা চিকিৎসার জন্য ওষুধ, ইনজেকশন ও সেলাইন প্রেসক্রিপশন করে দিচ্ছেন। তবে সেই ওষুধের বেশিরভাগই যোগান নেই হাসপাতালে। তাকে নয়শো টাকার ওষুধ, ইনজেকশন ও সেলাইন বাইরের দোকান থেকে কিনে আনতে হয়েছে। আউটডোরের চিকিৎসক ডাঃ সায়ন জোয়াদ্দার বলেন, তিন চার সপ্তাহ এমন হচ্ছে। মারাত্বক পরিস্থিতি চলছে। দুই একজন বুঝলেও সবাই ঝগড়া লেগে যাচ্ছে। ওষুধ না পাওয়ায় রোগীর বাড়ির লোকেরা তাদের উপর চড়াও হচ্ছে। ফলে ইনডোরে পেসেন্ট ভর্তি করতেও ভয় লাগছে। এদিকে এমন অবস্থা হওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভে সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। সাধারণ মানুষের দাবী পুরসার সরকারি হাসপাতাল এখন বেসরকারী নার্সিংহোমে পরিনত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের বিএমওএইচ পায়েল বিশ্বাস বলেন, তিনি আগেই ওষুধ ইনজেকশন ও স্যালাইনের কথা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে জানিয়েছেন। আজকে আবারও জানাবেন। যাতে পরিস্থিতি ঠিক হয় তারজন্য সবরকম চেষ্টা করবেন। তবে এমন চলতে থাকলে পরিস্থিতি দিনের পর দিন যে ভয়ানক হবে তা আঁচ করছেন হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে কর্মী সহ স্থানীয় মানুষরা।