|
---|
আজিজুর রহমান,গলসি : সরকারী বিধিনিষেধ না মেনে গলসিতে মাঠে পোড়ানো হচ্ছে খড়ের নাড়া। সন্ধ্যার পরই সেই দৃশ্য চোখে পরছে গলসির বেশ কিছু এলাকায়। তবে এতে কোন কোন চাষি নারাজ থাকলেও কিছু কিছু চাষি পুড়ছে দিচ্ছে সেই নাড়া সুত্র মারফৎ এমনটাই জানা গেছে। কোন কোন চাষি আবার পাহাড়াও দিচ্ছে মাঠে। স্থানীয় মইদুল চৌধুরী বলেন, গোপনে কে বা কারা ওই আগুন লাগাচ্ছে তা নিয়ে ধন্দে আছেন তারা। তার দাবী মাঠের রাখালরা অনেক সময় মজা করে জমিতে মজুত খড়ের নাড়াতে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, এমন হলে রাতের আগুনে বড়সড় বিপদও ঘটে যেতে পারে। রাজু রায় নামক আরও এক চাষি বলেন, খড় গুলি জমিতে পচাতে পারলেই সার তৈরী হবে। যাতে পরের চাষে বহুগুন উপকার আসবে। ওই সারের জন্য রাসায়নিক সারের প্রয়োগ কম করতে হবে। ফলে চাষের খরচও অনেকটা বাঁচবে। পুরসার চাষি গুলজার সেখ বলেন, যারা বোকা চাষি তারাই জমিতে পরে থাকা খড়ের নাড়া পুড়িয়ে দিচ্ছে। আগে আমরা সারকুড়ে খড়, কুটি, পাতা মজুত করে রাখতাম। জল পেয়ে সেগুলি পচে গেলে ট্রাক্টর বা গোরুর গাড়ি করে মাঠে ছড়িয়ে দিতাম। এতে সেই সারগুলি জমির উর্বরা শক্তি বাড়াতো। তার দাবী যারা ধান কাটার পর অন্য চাষ করতে চায় তাদের উচিত রোটার ফাল ব্যাবহার করা। এতে খড়ের নাড়া সব কুচি হয়ে গিয়ে জমিতে মিশে যাবে। যাতে চাষিদের উপকার হবে। তবে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিলে, কেঁচোগুলি মারা যাবে যাতে ফলনে ব্যাঘাত ঘটবে। শিড়রাই গ্রামের চাষি জাহিদুল সেখ বলেন, খড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের মাঠের মজুত নাড়া বেশিরভাগ চাষি বাড়িতে নিয়ে চলে আসছে। তবে কেউ কেউ আবার গোপনে নাড়া পুড়িয়ে দিচ্ছে। তবে তা চাষিরা করছে কিনা সেটা তিনি জানেন না। গলসি ২ নং ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা সরোজ কুমার ঘোষ বলেন, নাড়া পোড়ানো মানেই চাষিদের নিজের ক্ষতি। এতে জমির মাটি পুড়ে যায় ও আগুনের তাপে কেঁচো সহ বিভিন্ন কৃষি উপকারী ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। ফলে লোকসান চাষিদেরই হয়। তাছাড়া চাষি ভাইদের সুবিধার জন্য রাজ্য সরকারের নির্দেশে তারা এই বিষয়ে বার বার প্রচার ও মাইকিং করেছেন। প্রতি পঞ্চায়েতে চাষিদের নিয়ে বৈঠকও করেছেন বেশ কয়েকবার। এলাকায় এলাকায় ব্যানার লাগিয়ছেন। তবে আগের থেকে নাড়া পোড়ানো অনেকটা কমছে বলে তার অভিমত। তার দাবী নাড়া না পুড়িয়ে তা দিয়ে কৃষির উন্নয়ন সম্পর্কে জানতে যে কোন চাষি তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ও তার দপ্তর সবরকম সাহায্য করবেন।