পড়ুয়াদের দীর্ঘ অনুপস্থিতি, বিদ্যালয়ে ফেরাতে উদ্যোগী হলেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক

সেখ মহম্মদ ইমরান,নতুন গতি, মেদিনীপুর:-বেশ কয়েকদিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছিল কিছু ছাত্র ছাত্রী বিদ্যালয় বিমুখ। অন্যান্য সহপাঠীদের মাধ্যমে খবর নেওয়া বা খবর পাঠানোর চেষ্টা করা হলেও তেমন ভাবে কোন প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি অনুপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে। কয়েকজন বিদ্যালয়ে এলেও নিয়মিত একেবারেই নয়। 

    ঘটনাটি মেদিনীপুর সদর ব্লকের তলকুই উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বুধবার স্কুলে এসে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী অরিন্দম দাস দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের একটি তালিকা তৈরি করে বেরিয়ে পড়েন ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ির উদ্দেশ্যে। পার্শ্ববর্তী যমুনাবালি, পাটনা, ভগীরথ, বামুন ডাঙা, চণ্ডীপুর – এই সমস্ত গ্রামগুলি থেকেই মূলত পড়ুয়ারা আসে এই বিদ্যালয়ে। অরিন্দম বাবু জানান শহরের খুব কাছে তাঁদের এই উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তাই এই বিদ্যালয়ে ছাত্র সংখ্যা এমনিতেই কম। তাছাড়া এখানে মূলত সমাজের একেবারে পিছিয়ে পড়া, খেটে খাওয়া মানুষের বাড়ির ছেলে মেয়েরাই পড়াশুনা করে। তাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব এমনিতেই রয়েছে। তাই অভিভাবকদেরও সন্তান সন্ততিদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর তেমন উদ্যোগও দেখা যায় না।


    ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মহাশয় জানান এমন উদ্যোগ এই প্রথম বার নয়, মাঝে মাঝেই তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। তিনি বলেন বিদ্যালয়ে ছাত্র সংখ্যা কম হওয়ায় খুব সহজেই প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন উনারা। সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন সরকারি সাহায্য প্রাপ্তির যাবতীয় ব্যবস্থা, যেমন আধার কার্ড, ব্যাঙ্কের খাতা খোলার মতো পরিসেবাও স্কুল থেকেই দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
    এদিন বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়ি গিয়ে দেখা যায় বাড়িতে সে একাই রয়েছে। বাবা-মা দুই জনেই বাইরে কাজে গিয়েছেন। আবার কয়েকজনের অভিভাবক ঘরে থাকলেও ছেলে বা মেয়েকে বিদ্যালয়ে পাঠানোর ক্ষেত্রে উদাসীন। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মহাশয় বোঝানোর চেষ্টা করেন কেন শিশুদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে।
    অরিন্দম বাবু আমাদের জানান যে সমস্যাটা বেশ জোরালো। পরিবারের বড়রা রোজগারের জন্য বেরিয়ে গেলে স্কুল পড়ুয়া ছোট সদস্যকেই ঘর পাহারা দিতে হয়। আসলে সচেতনতার অভাব, নেশায় আসক্তি ইত্যাদি নানান কারণে এলাকা আজও পিছিয়ে পড়া। তবে তিনি হাল ছাড়তে নারাজ। নিয়মিত যোগাযোগ এবং উপযুক্ত পরিসেবা প্রদানের মাধ্যমে একদিন সাফল্য আসবেই বলে তিনি মনে করেন।