‘নভেল করোনা ভাইরাসের’ পরীক্ষা থেকেই ভবিষ্যতে বিপদ বাড়বে বলে মনে করছেন বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেট্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের জেরে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজারেরও বেশি। আক্রান্ত প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। এদিকে ভারতেও বেড়েই চলেছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার সকাল পর্যন্ত ভারতে মোট COVID-19 আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এদেশে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৪ জন। পরিস্থিতির বিচারে বহু রাজ্যে কোয়ারানটিনে রয়েছেন অনেকেই। করোনা-লক্ষণ দেখলেই দ্রুত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ মেনে চলা হচ্ছে। তবে এই পরীক্ষা থেকেই ভবিষ্যতে বিপদ বাড়বে বলে মনে করছেন বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেট্টি।

    সম্প্রতি এই ভাইরাস নিয়ে বিশিষ্ট চিকিৎসকের এক অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে । যেখানে অত্যধিক করোনা-পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ডা. শেট্টি বলেন, ‘এই বার্তাটি শুধুমাত্র ভারতের জন্য। এখানে সমস্যাটা অন্যরকম। আমাদের দেশের জনসংখ্যা ১৩০ কোটি, আর পরীক্ষা-কিট রয়েছে দেড় লাখেরও কম।’

    বিশিষ্ট চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, ‘যদি কারোর ফ্লু বা সর্দি থাকে, প্রথমে নিজেকে আইসোলেট করে লক্ষণ ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। প্রথম দিন শুধু ক্লান্তি আসবে। তৃতীয় দিন হালকা জ্বর অনুভব হবে। সঙ্গে কাশি ও গলায় সমস্যা হবে। পঞ্চম দিন পর্যন্ত মাথা যন্ত্রণা। পেটের সমস্যাও হতে পারে। ষষ্ঠ বা সপ্তম দিনে শরীরে ব্যথা বাড়বে এবং মাথা যন্ত্রণা কমতে থাকবে। তবে ডায়েরিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। পেটের সমস্যা থেকে যাবে। এবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অষ্টম ও নবম দিনে সব লক্ষণই চলে যাবে। তবে সর্দির প্রভাব বাড়তে থাকে। এর অর্থ আপনার প্রতিরোধক্ষমতা বেড়েছে এবং আপনার করোনা-আশঙ্কার প্রয়োজন নেই।’

    তবে কি করোনা-পরীক্ষার প্রয়োজন নেই? চিকিৎসকের উত্তর, ‘এমন সময়ে আপনার করোনা-পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। কারণ আপনার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। যদি অষ্টম বা নবম দিনে আপনার শরীর আরও খারাপ হয়, করোনা-হেল্পলাইনে ফোন করে অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নিন।’ একইসঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ‘ভারতের কাছে এই মুহূর্তে ১৫০,০০০ পরীক্ষা-কিট রয়েছে। এবং সর্বোচ্চ ১.৫ কোটির পরীক্ষা সম্ভব। তাই জ্বর হওয়ার দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনেই প্রত্যেকেরই করোনা-পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। এতে আরও বড় সমস্যা হবে।’

    এরপরই শিক্ষিত সমাজের কাছে আর্জি জানিয়েছেন ডা. শেট্টি, ‘আমার পরামর্শ হল, জ্বর হলেই করোনার পরীক্ষা নয়। আগে অপেক্ষা করে উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করুন। খারাপ হলে নিজেকে পরীক্ষা করিয়ে নিন।’ অত্যাধিক মাস্ক বিক্রির জেরে তাঁর হাসপাতালেও নাকি ‘N95 মাস্কে’র অভাব পড়েছে বলে চিকিৎসক বলেন, ‘আপনি ভয় পেয়েছেন বলে পরীক্ষা করা উচিত নয়।’