|
---|
জৈদুল সেখ, নবগ্রাম: চলে গেলেন বিশিষ্ট কবি-সম্পাদক মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার পাঁচগ্রামের ভূমিপুত্র নুরুল ইসলাম (৮৭)। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতার কাছে বাটানগরে তিনি মারা যান। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি অসুস্থ হন। জীবনের অজস্র সৃষ্টি স্মৃতি রেখে চলে গেলেন তিনি না-ফেরার দেশে।
জন্ম গ্রহণ করেছেন ১৬ পৌষ ১৩৪০ বঙ্গাব্দে, মুর্শিদাবাদ জেলার পাঁচগ্রাম অঞ্চলের খড়িকাডাঙা গ্রামে। পিতার নাম কাজি কুতুবউদ্দিন আহম্মদ এবং মাতা হলেন মেহেরুন্নেসা বেগম। জঙ্গিপুর মহাবিদ্যালয় থেকে বি এ পাশ করে শিক্ষক হিসেবেই কাজে যোগদান করেন। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগ জন্মায়। এই শেষ বয়সে এসেও একবিন্দু ভাটা পড়েনি। জীবনে অনেক সম্মান ও সম্বর্ধনা পেয়েছেন।
মফস্সলের প্রেস থেকে তিনি বেশ কয়েকটি বইও প্রকাশ করেছেন। বেশিরভাগই সেগুলি কাব্যগ্রন্থ : “স্বপ্নদ্যুতি”, “সুরের মূর্ছনা”, “সুফি সম্রাট নিজামী”, “জীবন সুরের মালা”, “অভিশপ্ত জীবন”, “বিলবসিয়া মা ঠাকরুণ”, “স্মৃতির জানালা খুলে”, “রক্তের মিছিল”,“দুরন্ত পিপাসা”এবং “নদীর তীরে সূর্যাস্ত” সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গল্প সংকলন।
বিশিষ্ট কবি তৈমুর খান বলেন “কাকে সাহিত্য বলে, কেমন লিখলে সাম্প্রতিক কালের সাহিত্য হয়, আমার লেখা আদৌ লোকে পড়ে কিনা এসব ভাববার আমার সময় নেই। একটা পত্রিকা আছে তিন মাস অন্তর তা প্রকাশ করতে হবে। পত্রিকার জন্য লেখা সংগ্রহ করতে হবে। যে লিখতে চায় তার কাছ থেকেই লেখা নিতে আপত্তি নেই। শুধু পত্রিকাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কিছু অর্থ সাহায্য দিলেই হবে। প্রতিবছর মার্চ মাসের অনুষ্ঠানে আমরা একজনকে সম্বর্ধনা দিই। এটাই আমাদের রীতি।
এইসব কথাবার্তা শুনতে বেশ ভালোই লাগলো। যে একটানা এইসব বলে গেলেন তাঁর বয়স প্রায় ৮৬ বছর। এখনও টাট্টু ঘোড়ার মতো এখানে সেখানে ছুটে বেড়ান। নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে ডাক পেলে ভিন রাজ্যে যেতেও পিছু পা হন না। সারাজীবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। অবসর জীবনে সমস্ত সময় ব্যয় করেন এই সাহিত্যের পেছনেই। আজ শিক্ষক দিবসে অনেকক্ষণ তাঁর সঙ্গেই কাটালাম। হ্যাঁ, তাঁর নাম সাহিত্যের অক্লান্ত পথিক নূরুল ইসলাম।”