৬৫০ জন প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার ও একশত গৃহবধূদেরকে সেলাই মেশিন প্রদান

বাবলু হাসান লস্কর, সুন্দরবন : টমাস আলফা এডিসন- প্রেসিডেন্ট রুসভেলট বা স্টিফেন হকিংসের নাম কারো কাছে অজানা নয়। আধুনিক প্রযুক্তি কিম্বা রাজনীতি বা বিজ্ঞানের দিক থেকে গোটা পৃথিবীকে সক্ষম করে তুলেতে এইসব মহান মানুষ জনদের অবদান অস্বীকার্য। এনারা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার হলেও, প্রতিবন্ধকতা এদেরকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গতকাল কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাটে ‘রোটারি ক্লাব কলকাতা’ আয়োজিত ”সমর্থ মেলায়” স্বনামধন্য এগারো টাকার ডাক্তারবাবু, ক্লিনিকের হাত ধরে এইরকম পঞ্চান্ন জনের হাতে তুলে দেয়া হল বিশেষ ধরনের তৈরি হালকা অথচ টেকসই বিদেশ থেকে আমদানি করা হুইল চেয়ার। ‘এগারো টাকায় ডাক্তারবাবু’ ক্লিনিক এর কর্নধার শ্রী সুজয় রায় জানালেন, “একটু ভালবাসা আর সহমর্মিতা পেলে এরাও দেশ গঠনে বা জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে, পারবে দেশের পতাকা বিদেশের মাটিতে তুলে ধরতে।” তিনি আরো জানালেন, এই অনুষ্ঠান সাফল্যমন্ডিত করতে যাদের কথা না বললেই নয় তাদের মধ্যে ‘সুন্দরবনের সকাল’ নামে Whatsapp একটি গ্রুপ। এই গ্রুপের মাধ্যমেই সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন মানুষদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। সুদূর কুলতলি থেকে আসা এক উপভোক্তা হুইল চেয়ার পেয়ে বেজায় খুশি, তিনি জানালেন আজকেই যেন তার বড়দিন মনে হচ্ছে। মেলা চলাকালীন এই সমস্ত বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে ছিলেন সমাজ কর্মী গৌতম মন্ডল, হৃষিকেশ মন্ডল, পথিকৃৎ সাহা ওরফে ‘রোল কাকু’র মতন মানুষেরা। যিনি কিশোর বয়স থেকে তার নিজের সরকারি চাকরি ছেড়ে, অভুক্ত শিশুদের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন এবং এই মুহূর্তে সুন্দরবনের ছটি স্কুল চালাচ্ছেন সম্পূর্ণ নিজের উদ্যোগে। আজ বাচ্চাদের প্রিয় ‘রোল কাকু’র নিজের তিন বছরের একমাত্র সন্তানের জন্মদিন ছিল। কিন্তু সুন্দরবনের পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের বিশেষভাবে সক্ষম ছোট শিশুদের পাশে দাঁড়ানোটাই তার কাছে তার সন্তানের জন্য ছিল সবচেয়ে বড় উপহার বলে মনে হয়েছে। আর আজ তিনি তাঁর সন্তানের জন্মদিন ‘এগারো টাকায় ডাক্তারবাবু’র সহায়তায় সাফল্যের সাথে উদযাপন করেছেন। সমাজকে এগিয়ে নিয়ে জেতে আমাদের মত সহৃদয়বান মানুষজন সবাই মিলে এই সমস্ত প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতার হাত বাড়াই।