সারা ভারত আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় জিমনাস্টিক্স প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করল পূর্ব বর্ধমানের রোজিনা মির্জা

নিজস্ব সংবাদদাতা :সারা ভারত আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় জিমনাস্টিক্স প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করল পূর্ব বর্ধমানের রোজিনা মির্জা । ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এই প্রতিযোগীতা ২৯ মার্চ শুরু হয় পাঞ্জাবের অমৃতসরে। সেখানেই ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় চুড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগীতা। প্রতিযোগীতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করার জন্য রোজিনা ‘রৌপ্য পদক’ পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, টেবিল ভল্টে প্রথম স্থান অর্জন করা ও টিম চাম্পিয়ন হয়ে দুটি ’স্বর্ণ পদক’ ও ট্রফি জিতেছে রোজিনা। রোজিনার এই সাফল্যে খুশি তাঁর কোচ, পরিবার পরিজনরা।জানা গিয়েছে, রোজিনা মির্জার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের রায়নার নাড়ুগ্রাম পঞ্চায়েতের শংকরপুর গ্রামে। তাঁর বাবা মির্জা কাশেম আলী পেশায় রাজমিস্ত্রী। মা সাবিনা মির্জা গৃহবধূ। রোজিনা, কাশেম আলী ও সাবিনা মির্জার ছোটো মেয়ে। ছোট থেকেই রোজিনার জিমনাস্টিক্সের প্রতি আগ্রহ ছিল বলে জানান তাঁর বাড়ির সদস্যরা। কাকা মির্জা হাসেম আলীর সহযোগীতায় গ্রামের মাঠে জিমনাস্টিক্স অনুশীলন করতো রোজিনা। রোজিনা গ্রামের স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করে। এর পর পরিবারের লোকজন তাঁকে কলকাতার সুকান্তনগর বিদ্যা নিকেতনে ভর্তি করেন। সেখানেই পড়াশুনার পাশাপাশি রোজিনা কলকাতার ‘সাইয়ে’ জিমনাস্টিক্সের কোচিং নিতে শুরু করে। কঠোর অনুশীলন চালিয়ে স্কুল জীবনেই রোজিনা জিমনাস্টিক্সে চার বার ‘বেঙ্গল চাম্পিয়ন’ হয়। পরে ২০১৫ সালে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে রোজিনা স্বর্ণ পদক পায়।উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর কলকাতাতেই কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয় রোজিনা। কলকাতায় অনুশীলন করার সময়ে পায়ে গুরুতর চোট পায় সে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পায়ের চিকিৎসা চলে। তাঁর কলেজ যাওয়াও বন্ধ থাকে। এরপর ২০২০ সালে রোজিনা পঞ্জাবের গুরুনানক দেব ইউনিভার্সিটি ’অমৃতসরে খালসা কলেজে’ বি.এ প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়। পঞ্জাব থেকে পড়াশুনা চালানোর পাশাপাশি সেখানে কোচের তত্ত্বাবধানে রোজিনা জিমনাস্টিক্সের অনুশীলনও চালিয়ে যেতে থাকে। রোজিনা মির্জা জানান, ইন্ডিয়ান ইউনিভার্সিটি অ্যাসোসিয়েশন সারা ভারত আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় জিমনাস্টিক্স প্রতিযোগীতায় ‘আর্টিস্টিক জিমনাস্টিক্সে’ সে মহিলা বিভাগে গুরুনানক দেব ইউনিভার্সিটির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। সেই প্রতিযোগীতায় সে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ‘রৌপ্য পদক’ ও ট্রফি পায়। এছাড়াও ‘টেবিল ভল্টে’ স্বর্ণ পদক ও টিম চাম্পিয়ন হওয়ার জন্যে আরও একটি স্বর্ণ পদক ও ট্রফি পয়েছেন। সর্বভারতীয় স্তরের প্রতিযোগীতায় পদক প্রাপ্তিতে রোজিনা যথেষ্টই খুশি। এখন তাঁর লক্ষ দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করা।