ক্যান্সার আক্রান্তদের চুল দান করে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন স্নেহা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নতুন গতি, মালদা: মারণ রোগ ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার ফলে যাঁদের চুল ঝড়ে যায়, তাদের পাশে দাঁড়ানো ও সমাজে সাধারণ মহিলারা যাতে ১২ ইঞ্চি চুল দান করেন, সেই জন্য সচেতনতা গড়ে তুলতে মালদা জেলার নারায়ানপুরের বাসিন্দা স্নেহা জয়সওয়াল নামে এক ২২ বছরের যুবতি নিজের চুল দান করেছেন।

    এর আগে তিনি সাধারণ ভাবে নিজের অনেক লম্বা চুল কেটে ছোটো করেছিলেন। আর তার কিছুদিন পর তিনি তার বন্ধুদের দ্বারা জানতে পারেন যে, ক্যান্সার আক্রান্তের জন্য ১২ ইঞ্চি বা তার বেশি চুল দান করা যায়। এরকম ৬-৭ জনের চুল নিয়ে একটি উইগ তৈরী হয়। তাই তিনি অনেকদিন অপেক্ষা করে চুল লম্বা করতে থাকেন। যখন তিনি বুঝতে পারেন যে, চুল বেশ ১২ ইঞ্চির বেশি লম্বা হয়েছে তখন আর দেরি না করে তিনি সেই চুল কেটে মুম্বাইয়ের মাদাত ট্রাস্টে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেন।

    মালদার বাসিন্দা স্নেহা জানান যে, “আর আগে সব সাধারণই ছিল কিন্তু এবার যখন চুল কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলাম, আমার পরিবারের সবাই যেন এক অদ্ভুদ দৃশ্যে তাকিয়ে রইলো। আমার মাথা ভরা সুন্দর মসৃন চুল কেটে ফেলবো এটা যেন বাড়ির সবার কাছে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো। স্নেহার উক্তি যে, আমার চুল তো আবার গজিয়ে উঠবে আবার লম্বা হবে। আমি আবার আগের মতোই থাকবো। তবুও যেন এই সত্যটাকে মেনে নিতে পারছিলেন না। এই মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে যাঁদের চুল ঝরে যাচ্ছে, তাঁরা যদি ফ্রিতে ভালো মানের উইগ পান তা হলে তার চেয়ে বেশি আনন্দের কী হতে পারে?”

    তিনি আরো বলেন যে, “এই কাজটা শুধু আমিই করছি এমনটা নয়। এর আগেও এরকম আমার পরিচিত অনেকে চুল দান করেছেন। এই চুল দানের ব্যাপারটা এক স্বেচ্ছাসেবক এর কাছ থেকে জানতে পারি।তারপরই সিদ্ধান্ত নি যে যায় হোক আমার চুল কেটে ফেলে নষ্ট করবো না, ক্যান্সার আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াবো। আমি নিজ এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “নতুন আলো “-র সাথে যুক্ত, আমাদের এই সংগঠনের কর্ণধার আলমগীর খান এই চুল দানের ব্যাপারে সকলকে বোঝান। আমিও অনেকেই বুঝিয়েছি এবং আমার এক কাছের বন্ধু শ্রেয়া ও চুল দান করেছিল কিছুদন আগে। আমার খুব ভালো লাগছে, বাড়িতেও সকলে খুশি হয়েছে এই ভালো কাজে নিজের চুল দান করেছি বলে।”

    স্বেচ্ছাসেবক আলমগীর বলেন “২০১৯ থেকে এই কাজের সাথে যুক্ত আমি ও আমাদের টিম। প্রায় ৪৬ খানা চুল এখন পর্যন্ত মুম্বাইয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামীতে আরো পাঠাতে চাই। অনেকে এগিয়ে আসছে দেখে ভালো লাগছে।”