স্বর্গত “মা” এর শেষ ইচ্ছায় অভুক্তদের খাবার বিলি

সেখ সামসুদ্দিন, ১২ ফেব্রুয়ারি : কতটা পথ পার হলে পথিক বলা যায়? কতটা উপার্জন করলে বড়লোক বলা যায় ? আচ্ছা কতটা সমাজসেবা করলে বিশিষ্ট সমাজসেবী বলা যায় ? পথিক, কর্মঠ মানুষ বা সমাজসেবীরা নিজেরাও হয়ত জানেন না এর উত্তর ; হয়ত সকলের সত্যিই অজানা !! কিন্তু সকলেই কাজ করে যায় , পথ হেঁটে যায় নিজের তাগিদে , মনের ক্ষিদেতে , কাজ করার ইচ্ছায় !! মা স্বর্গত কৃষ্ণা শীলের স্মৃতিতে এই মন্ত্রেই পাশে থাকতে চেয়েছিলেন মেয়ে বুলটি শীল অর্ধাহারে থাকা মানুষদের, কয়েকদিন আগেই মারা যান মেমারীর পাল্লা ক্যাম্পের কৃষ্ণা শীল , এদিন ছিল তার পারলৌকিক কাজের নিয়ম ভঙ্গ ! মা চাইতেন দু:স্থের সেবা করতে , তাই মেয়ে চেয়েছিলেন তার মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে অন্ন তুলে দিতে অভুক্তদের মুখে, কিন্তু চেনা মানুষজনের লোক চক্ষুর আড়ালে। কারণ তার স্থানীয় এলাকায় তিনি এদিন দুপুরে ভোজের ব্যবস্থা করেছিলেন, কিন্তু মেয়ে যে একা, বাড়িতে নেই আর কেউ কর্মঠ ! যোগাযোগ করেছিলেন পাল্লারোড পল্লীমঙ্গল সমিতির সাথে, তাদের ব্যবস্থাপনায় মধ্যরাত্রে গাড়ি করে খাবার নিয়ে পৌঁছানো হয় বর্ধমান স্টেশনের পাশের গোডাউন এলাকায়। মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, বেগুনি,শাক ভাজা, ফুলকপি , মাছ , চাটনি, রসগোল্লা ও দই। এদিন রাতে ঠান্ডার কনকনে হাওয়াকে উপেক্ষা করে খাবার তুলে দেওয়া হয় ২১০জন মানুষের মুখে। বুলটি জানান “মা এর জীব সেবা ও প্রেম কে গুরুত্ব দিয়েই এই উদ্যোগ নিই , পল্লীমঙ্গল এর সহযোগিতায় এতগুলো মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে পেরে দারুণ লাগছে , মা খুশী হবেন”। দিন ছেড়ে কেন মাঝ রাতে ? পল্লীমঙ্গলের তরফে সন্দীপন সরকার বলেন “দিনের থেকে রাতে স্টেশনের পাশের অভুক্ত ফুটপাথ বাসীদের শণাক্তকরণ সহজ হয়, উনি চেয়েছিলেন ওর এলাকার চেনা মানুষদের বাইরে এই কাজ করতে তাই বর্ধমান স্টেশনকে বেছে নেওয়া হয়।”