|
---|
নতুন গতি : আজিজুর রহমান, গলসি : এখন দেখা যায় বেশিরভাগ বেসরকারি স্কুলের ছেলে মেয়েরা ডাক্তারিতে চান্স পাচ্ছে। তবে গ্রামগঞ্জের সরকারি স্কুলে পড়ে সফলতা পাওয়া যায় তা আবার একবার প্রমাণিত করলো গলসির পুরসা গ্রামের তামান্না পারভিন। একেবারে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে সে এবছর ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে। তামান্নার মা জোৎসনা সেখ জানান, তার স্বামী সেখ গোলাম মোস্তফা একজন ক্ষুদ্র কৃষক। তাদের তিনচার বিঘা জমিতে ঠিকভাবে সংসার চলে না। এরজন্য মাথার উপরে এখনও টিনের ছাদ রয়েছে। তবে তার শ্বশুর আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করতেন। আর তামান্নার অক্লান্ত পরিশ্রম ও রাতদিন এক করে পড়াশোনা করতো। তাই সে প্রমাণ করেছে যে, ইচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব। সারা ভারতে তামান্নার রাঙ্ক হয়েছে ১৮৫৪৮। তিনি বলেন, যারা বলে সরকারি স্কুল থেকে পরে ডাক্তারি পড়াতে চান্স পাওয়া যায়না। তাদের একবার হলেও তামান্নাকে দেখে শেখা উচিত। পুরসা অগ্রগামী যুব সংঘের সদস্য তথা অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সেখ ফিরোজ আহমেদ জানান, তামান্না গ্রামের পুরসা হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। তারপর গলসি উচ্চ বিদ্যালয়ে উচ্চমাধ্যমিক। উচ্চমাধ্যমিক শেষে একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোচিং নেয়। তিনি জানিয়েছেন, তার অক্লান্ত পরিশ্রমের সাথে তার মায়ের প্রচেষ্টার জন্য এতদুর যেতে পেরেছে তামান্না। এদিকে গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে তার সাফল্যের খবর আসে। তবে তা এলাকার অনেকেই জানেন না। তামান্না বাবা সেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি তো সময় দিতে পারতাম না। ওর মা বেশি বেশি নজর রাখতো। তিনি বলেন, আমার বাবা প্রাইমারি শিক্ষক ছিলেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারীতে অবসর গ্রহন করেছেন। তিনিই পেনসেনর টাকা থেকে তামান্না পারভিনের পড়াশোনার খরচ চালাতেন। এমনকি সবসময় সাহস যোগাতেন। তার দাবী, সবার জন্যই এই সাফল্য এসেছে। এদিন খবর পেয়ে স্থানীয় পুরসা অগ্রগামী যুব সংঘের সদস্যরা তাদের বাড়িতে যান। তারা তামান্নাকে ফুল, মিষ্টি, মেমেন্ট ও উপহার দিয়ে উৎসাহিত করেন। এমন ভাবে সাফল্য এনে তামান্না পরিবারের পাশাপাশি গ্রাম ও এলাকার মুখ উজ্জ্বল করেছে বলে জানা গেছে।