মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায় বুলবুল খানকে প্রার্থী করার দাবি ছাত্র-যুবদের, শুরু হয়েছে জোর জল্পনা

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: কয়েক মাস পরই বিধানসভা নির্বাচন। শাসকদল সহ অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দলই নেমে পড়েছে প্রচারে। এরই মধ্যে প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে মালদার ৪৬ নম্বর বিধানসভা হরিশচন্দ্রপুরে। সৌমিত্র রায়, তাজমুল হোসেন ও মর্জিনা খাতুনের পাশাপাশি জোরালো হচ্ছে বুলবুল খানের নাম। তৃণমূল ছাত্র যুবরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুলবুল খানের পক্ষে সওয়াল করছে। ছাত্র-যুব থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই চাইছে জনদরদী জননেতা বুলবুল খানকে। কে হবে প্রার্থী এ নিয়ে হরিশচন্দ্রপুরের রাজনৈতিক মহল এখন সরগরম।

    গোষ্ঠি কোন্দলে জর্জরিত তৃণমূল। ব্যাতিক্রম নয় মালদহের হরিশচন্দ্রপুরও। গোষ্ঠি কোন্দল এড়াতে কাকে প্রার্থী মনোনীত করবে দল সেই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে এলাকায়। মালদা জেলার ৪৬ নম্বর বিধানসভা, হরিশচন্দ্রপুরের জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান কে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাকে প্রার্থী করার দাবি তুলছে তৃণমূল ছাত্র-যুবরা। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড় তুলেছে তারা। বুলবুল খানকে সচরাচর সব সময়ই মানুষের বিপদে আপদে ছুটে আসতে দেখা যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর করোনা আবহকালে, গরিব শীতার্তদের শীতবস্ত্র বিতরণ, আর্থিক সাহায্য, ত্রাণ, খাদ্য সামগ্রী, লঙ্গরখানা এবং আরও নানান ভাবে দুঃস্থ মানুষদের সাহায্য করেছেন তিনি। এলাকাবাসীদের থেকে জানা গেছে,নিজ উদ্যোগে দুঃস্থ প্রতিবন্ধীদের হ্যান্ডিকেপ্ট সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা, শীতবস্ত্র, কম্বল দিয়ে সাহায্য করেছেন তিনি। এছাড়াও অনেক সময় কন্যাদায়গ্রস্থ দরিদ্র পিতা-মাতাকে আর্থিক সাহায্য এবং অনেক সময় মেয়ের বিয়ের যাবতীয় খরচ-খরচা বহন করেছেন তিনি। সমগ্র লক ডাউনে হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক ১ ও ২ এর সব জায়গায় তাকে দেখতে পাওয়া গেছে। কোথাও না কোথাও মানুষের সাহায্য করার জন্য উপস্থিত ছিলেন তিনি। এমনকি পরিযায়ী শ্রমিকদের যথাসাধ্য আর্থিক সাহায্য করে তাদের কষ্ট নিবারণ করেছেন তিনি। এই সব নানান কারণে তৃণমূল ছাত্র-যুবরা তাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার দাবি তুলেছে। তাদের দাবি বুলবুল খানের কাছে যখনই কোনো কাজে তারা সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে তখনই তিনি উপস্থিত হয়েছেন, এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

    আমরা জানি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার দলের প্রার্থী নির্বাচন করে থাকেন। এক্ষেত্রেও তিনি কাকে প্রার্থী নির্বাচন করবেন তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। এখনও পর্যন্ত মালদা ৪৬ নম্বর বিধানসভা হরিশচন্দ্রপুর থেকে তিন জন প্রার্থীর নাম উঠে এসেছে, প্রখ্যাত গায়ক তথা তৃণমূল নেতা সৌমিত্র রায়, প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা তাজমুল হোসেন এবং জেলা পরিষদের শিশু নারী ও ত্রাণ কর্মধক্ষা মর্জিনা খাতুন। এবং এই তিন নামের সাথে জোরালো হচ্ছে জননেতা বুলবুল খানের নামও। যদিও এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি বুলবুল খান। তিনি সাফ বক্তব্যে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাকে প্রার্থী মনোনীত করবেন তাকেই মেনে নেবেন তিনি।

    এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল যুবনেতা তার বক্তব্যে জানান, “হ্যাঁ আমিও সহমত। যদিও দল যাকে মনোনীত করবে আমরা তাকেই মেনে নেব। তবে বুলবুল খান সবসময় ছাত্র-যুবদের সঙ্গে থাকেন, সাহায্য করেন। মানুষ তো সাধারণভাবে তাকেই চাইবে যাকে পাশে পায় সবসময়। যেহেতু বুলবুল খান সবসম আমাদের পাশে থাকে তাই তিনি প্রার্থী হলে আমরা বেশি খুশি হব। এবং তার জনসেবামূলক কাজকর্ম সম্পর্কে তিনি বলেন, “শুধু ছাত্র যুব নয়, খোঁজ নিলে দেখা যাবে বিগত সাত মাস যখন লকডাউন ছিল তখন ব্লক ১ ও ২ এর সব জায়গায় তাকে দেখতে পাওয়া গেছে। কোথাও না কোথাও মানুষের পাশে মানুষের কাজ করার জন্য লেগে ছিলেন তিনি।” আরও তিন প্রার্থী সম্পর্কে তিনি বলেন, “আরও নাম তো উঠে আসতেই পারে। দল যাকে যেখানে বলবে তাকে সেখানেই দাঁড়াতে হবে। আমাদের এখানে যাকে প্রার্থী হিসেবে পাঠাবেন আমরা তার হয়ে একনিষ্ঠভাবে ভোট করব। যদিও এই চার প্রার্থীর মধ্যে কাকে তারা পছন্দ করবেন সে নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।

    হরিশচন্দ্রপুর দু’নম্বর ব্লক যুব তৃণমূল নেতা বরকত খান এ বিষয়ে তার মাতামতে জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমরা ছাত্র রাজনীতি তে অনেক নেতাকে দেখলাম। এবার যুব সমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলেই এবার নতুন মুখ হিসেবে বুলবুল খানকে চায়। এই করোনা আবহকালে লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক সাহায্য,গ্রামে গ্রামে খাবার পৌঁছে দেওয়া,দুঃস্থ মেয়েদের বিয়ে দেওয়া, অসুস্থদের চিকিৎসা, ঈদ, পুজো সবেতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। আমাদের বিশ্বাস বুলবুল খানকে পাশে পেলে যুব সমাজ আরও এগিয়ে যাবে।

    ছাত্র নেতা বিমান ঝাঁ এই বিষয়ে তার মন্তব্যে জানান, হরিশচন্দ্রপুরে দুটো বিপর্যয় কেটেছে। বন্যা এবং করোনা। বন্যায় জল কেটে প্রতিটা গ্রামে খাবার পৌঁছে দিতেন তিনি। কোনো জনপ্রতিনিধি না থাকলেও তিনি ছিলেন। করোনাতে গ্রামে গ্রামে ঘুরে চাল আলু দেওয়া থেকে শুরু করে করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ বিলি করেছেন বুলবুল খান।
    ‘গুরুত্বপূর্ণ পদে না থেকেও বুলবুল খান যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তার ধারে কাছে থাকবেন না তারা। এবং তিনি জানান ব্যক্তিগতভাবে প্রার্থী হিসেবে তিনি বুলবুল খানকেই পছন্দ করবেন। হরিশ্চন্দ্রপুরে শাসকদলের প্রার্থীর দাবিদার হিসেবে চারজনের নাম উঠে এলেও ছাত্র-যুব থেকে সাধারণ মানুষ বুলবুল খানকে চাইছেন। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এবিষয়ে খোলাশা করে কিছুই জানাননি। এই বিষয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত। কে হবে হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূলের প্রার্থী তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।