সামনে বিধানসভা নির্বাচন, বাংলার মন জয় করতে স্বামী বিবেকানন্দ ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে হাতিয়ার করতে চলেছে বিজেপি

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: সম্প্রতি শান্তিনিকেতন ঘুরে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভোটের অঙ্কে বাংলার মন জয়ে এ বার কি স্বামী বিবেকানন্দ ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকেও হাতিয়ার করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর দল? খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই দুই মনীষীর জন্মবার্ষিকীতে রাজ্যে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে বিজেপি সূত্রের খবর।

    বিজেপির সঙ্গে বাংলার যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রবল সরব তৃণমূল। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশ এ নিয়ে দলের অস্বস্তি এবং আশঙ্কার কথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। সে কারণেই বাংলার মনীষীদের স্মরণ করা বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে বিজেপির কাছে। নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপনের সূচনা হবে আগামী ২৩ জানুয়ারি। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে আসতে পারেন। সোমবারই কেন্দ্র এই দেশনায়কের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিটি গড়েছে।

    তার আগে ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিনে ফের রাজ্যে আসতে পারেন অমিত শাহ। ওই দিন একাধিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি হাওড়ায় একটি জনসভাও করতে পারেন। জনসভার প্রস্তুতি নিতেও প্রাথমিক ভাবে রাজ্য নেতৃত্বকে বলা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। গত ১২ জানুয়ারি রাজ্যে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বেলুড়ে আগের দিন রাত কাটিয়ে সেখানে বিবেকানন্দর জন্মজয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৩ জানুয়ারি রাজ্যে এসে নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধার্পণ করতে পারেন। তবে তাঁর কর্মসূচি এখনও স্পষ্ট নয়। রাজ্য বিজেপি নেতারা মনে করছেন, মোদী এলগিন রোডে নেতাজির বাড়িতে যেতে পারেন।

     

    তৃণমূল বিগত বছরগুলির মতোই বিবেকানন্দ ও সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালনে গুচ্ছ কর্মসূচি নিতে চলেছে। নেতাজির ১২৫ তম জন্মদিন পালনের সরকারি কমিটির শীর্ষেও আছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিবেকানন্দর জন্মদিনেও রাজ্য সরকারের তরফে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একই সঙ্গে তৃণমূলের নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেন। এই বছরেও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে জানিয়েছেন সৌগত রায়। নেতাজির জন্মদিনেও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। সৌগতর কথায়, ‘২৬ নভেম্বর নেতাজির জন্মবার্ষিকীর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কমিটি গঠন করেছেন। অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, শঙ্খ ঘোষ, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় কমিটিতে রয়েছেন। কেন্দ্র সব সময় নেতাজিকে অবহেলা করেছে। এখন শেষবেলায় ম্যানেজ করতে কমিটি গঠনের কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিবেকানন্দর জন্মদিনও সারা রাজ্যে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হবে।’

    বিজেপি সূত্রের খবর, অমিত শাহের কর্মসূচি ঘিরে জনতার উৎসাহ দেখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফের সামনের মাসে রাজ্যে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। দক্ষিণবঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের পর হাওড়ায় বিজেপির জমি ক্রমেই শক্ত হচ্ছে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘কে বলতে পারে মেদিনীপুরের মতো হাওড়াতেও একঝাঁক অন্য দলের নেতা শিবির বদল করে গলায় গেরুয়া উত্তরীয় পরে নেবেন না!’ যদিও মোদী-শাহ জুটির ১০ দিনের ব্যবধানে সম্ভাব্য বাংলা সফরকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না তৃণমূল। সৌগত রায়ের কটাক্ষ, ‘এই সব দেখে আমাদের অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। ভোটের আগে বিজেপির হনুমানরা ধুপধাপ করে বাংলায় লাফিয়ে পড়তে চাইছে, এই হনুমানদের বাংলার মানুষ গুরুত্ব দেবে না।’