মন্দির পুনর্নির্মাণে ১কোটি টাকার জমি দানে সম্প্রীতির নজীর গড়লো এক মুসলিম ব্যক্তি

মন্দির পুনর্নির্মাণে ১কোটি টাকার জমি দানে সম্প্রীতির নজীর গড়লো এক
মুসলিম ব্যক্তি

    নতুন গতি ডিজিটাল ডেস্ক : একই বৃন্তে দু’টি কুসুম, হিন্দু মুসলমান। এটাই তো ভারতবর্ষের খ্যাতি। এখানেই তো বাকি সব দেশের থেকে অনন্য এ বৈচিত্র্যময় দেশ। বর্তমান পরিস্থিতিতে নানা সময়ই সাম্প্রদায়িক অশান্তির খবর শিরোনামে উঠে এলেও ভারত ভোলেনি তার ঐতিহ্য, অতীত গৌরব। তাই তো আজও হিন্দুর শবদেহে কাঁধ দেন মুসলিম বন্ধু। আবার ইদ থেকে দিওয়ালি- যে কোনও উৎসবে একসঙ্গে মেতে ওঠেন সব ধর্মের মানুষ। ভারতীয় সংস্কৃতির তেমনই এক নজির তৈরি হল বেঙ্গালুরুতে। যেখানে পুরনো একটি হনুমান মন্দিরকে আরও বড়সড়ভাবে গড়তে জমি দান করলেন এক মুসলিম ব্যক্তি।

    বেঙ্গালুরুর থেকে সামান্য দূরেই ভাবাগেরেপুরায় বছর তিরিশের আগের একটি হনুমান মন্দির রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে জাতীয় সড়ক তৈরির মতো জায়গা করে দিতে হবে। তাই মন্দির দর্শনের জন্য ওই পথে ভিড় জমাতে পারবেন না ভক্তরা। সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ী এইচএমজি বাসার শরণাপন্ন হয় মন্দির কর্তৃপক্ষ। কারণ মন্দিরের কাছেই অনেকখানি জমি রয়েছে কার্গো ট্রান্সপোর্টের সঙ্গে যুক্ত ওই ব্যবসায়ীর। তাঁকে অনুরোধ জানানো হয়, যদি জমির খানিকটা অংশ তিনি মন্দিরকে দান করেন, তাহলে মন্দিরের অভিমুখ বদলে অন্যভাবে তা গড়ে তোলা যাবে। এমন প্রস্তাবে একবারেই রাজি হয়ে যান বাসার। বরং মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁর থেকে যতটা জমি চেয়েছিলেন, তার চেয়েও বেশি জমি মন্দির নির্মাণের জন্য দান করেন তিনি। যার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা।

    মন্দির ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট এমডি বাইরেগৌড়া জানান, নানা পুজো-পার্বণে মন্দিরে উপস্থিত হন বাসার। তাই তাঁদের ভরসা ছিল বাসারকে অনুরোধ জানালে তিনি অসম্মতি দেবেন না। তবে বাসার এই মহানুভবতা অবাক করেছে তাঁদের। অপ্রত্যাশিতভাবে অনেকটা জমি মেলায় আপ্লুত মন্দির কর্তৃপক্ষ। বাসার কথায়, “কতদিন বাঁচব, তা তো কেউ বলতে পারি না। তাই যদি কারও ভাল কাজে আসি, সেটাই করার চেষ্টা করব। অহেতুক হিংসা ছড়ানোর চেয়ে তা অনেক ভাল।” তিনি আরও বলেন, রাজনীতির নেতা-মন্ত্রীরাই সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে কিন্তু এই হীনমন্যতা বা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় না।

    বাসার এর এই উদ্যোগে দারুণ খুশি গ্রামবাসীরা। তাঁর পোস্টার তৈরি করে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গুণগান গাইছেন প্রত্যেকেই। সাধারণের পাশে দাঁড়িয়ে খুশি ব্যবসায়ীও। আগামী বছর থেকে থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানান যায়।