|
---|
নতুন গতি নিউজ ডেস্ক, মালদা, ১৬ই জুলাই। মালদা শহরে গ্রামীণ এলাকার টোটো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর এবার সরাসরি প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাতে রাস্তায় নামল টোটোচালকেরা । মঙ্গলবার সকালে পুরাতন মালদার থানার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সেতুমোড় এলাকায় ইংরেজবাজার পুরসভার জঞ্জাল সাফাইয়ের গাড়ি আটকে দেয় আন্দোলনকারী টোটো চালকের। এরপরেই ওই রাস্তা দিয়ে আসা ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যানের গাড়ি এবং জেলা প্রশাসনের একটি সরকারি গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান টোটো চালকেরা । যদিও ওই গাড়িতে চেয়ারম্যান বা প্রশাসনের কোন কর্তারা সেই সময় ছিলেন না। এদিন সকাল ১১টা নাগাদ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সেতুমোড় এলাকা। একঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সরকারি গাড়ি আটকে চলে টোটো চালকদের বিক্ষোভ । পড়ে খবর পেয়ে পুরাতন মালদা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পর অবশেষে অবরোধ উঠে যায়।
উল্লেখ্য, মালদা শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে এবং টোটো দৌরাত্ম্য ঠেকাতে গত ৫ জুলাই থেকে শহরের মধ্যে গ্রামীণ এলাকার টোটো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন । এরপর থেকে দফায় দফায় শুরু হয় গ্রামীণ এলাকার টোটো চালকদের বিক্ষোভ। বিভিন্ন এলাকায় পৃথকভাবে সড়ক অবরোধ করা হয় । গত সোমবার টোটোর পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় একটি বৈঠক করে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। কিন্তু সেখানেও গ্রামীণ এলাকার টোটো চলাচলের বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে শহরকেন্দ্রিক গ্রামীণ এলাকার শতাধিক টোটো চালকেরা।
এদিন সকালে সেতুমোড় এলাকার সড়ক ধরে ইংরেজবাজার পৌরসভার আবর্জনা ফেলার গাড়ি যাচ্ছিল। সেই সময় ওই গাড়িটি পথ আটকায় কয়েকশো টোটো চালক। গাড়িটিকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা। এরপরই পুরসভার চেয়ারম্যানের গাড়ি ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় সেই গাড়িটিকেও আন্দোলনকারী টোটো চালকেরা দাঁড় করিয়ে দেয়। যদিও ঘটনার সময় গাড়িতে চেয়ারম্যান ছিলেন না। এরপরই আরও একটি সরকারি গাড়ি ওই রাস্তায় আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন টোটো চালকেরা।
বিক্ষোভকারী টোটো চালক জোতন ঘোষ, উৎপল দাস, মিঠুন দাসদের বক্তব্য, ধার দেনা করে আমরা টোটো কিনেছি । কিন্তু গ্রামের টোটো শহরের রাস্তায় চলতে দেওয়া হচ্ছে না। গ্রামে ভাড়া মিলছে না। শহরে টোটো না চালালে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া টাকা কি করে শোধ করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। এই অবস্থায় আমাদের অবরোধ, আন্দোলন করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে এদিন পথ অবরোধের সামিল হয়েছি। আমাদের দাবি গ্রামীণ এলাকার সমস্ত টোটো আগের মতোই শহরের চলাচল করতে দিতে হবে।
ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান নীহার ঘোষ জানিয়েছেন, বিক্ষোভ অবরোধের সময় আমার গাড়িটি আটকে দিয়েছিল কিছু টোটো চালক। পরে পুলিশ গিয়ে সেটি ছাড়িয়ে এনেছে। শহরের যানজট মোকাবিলায় যত্রতত্র গ্রামীণ এলাকায় টোটো চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে । কিছু ভালো কাজ করতে গেলে এরকম বাধা আসবে । সব কিছুকে কাটিয়ে সুষ্ঠুভাবে মানুষের পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা পুরসভা এবং প্রশাসন করছে।